নিজস্ব সংবাদদাতা: ঠিক যেন একটা দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া মুড়ির টিন! কিছুই নেই সামনের থেকে মধ্য অংশে। মৃত মানুষের সঙ্গে দলা পাকিয়ে একাকার! বৃহস্পতিবার রাতে খড়গপুর শহরে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৩ ব্যক্তির মৃত্যুর পর এমনই প্রশ্ন উঠেছে যে কতটা নিরাপদ এই পলকা টিনের তৈরি গাড়ি? ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ২জন। তাঁদের খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুর শহরের ইন্দা থেকে চৌরঙ্গী যাওয়ার রাস্তায় নিউটাউনের ঠিক মুখেই আনন্দনগর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের মধ্যরাতে আনুমানিক রাত ১টা নাগাদ। মৃতরা সবাই বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা। বিষ্ণুপুর থেকে বিশেষ প্ৰয়োজনে তাঁরা রাতেই খড়গপুর শহরে আসছিলেন। খড়গপুর শহরে ঢোকার ঠিক মুখেই বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য একটি গাড়ির সংগে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় দুটি গাড়ির মধ্যে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৩ জনের।
পুলিশ জানিয়েছে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর থেকে মারুতি ভ্যানে করে আসছিলেন চালক সহ ৫জন। এঁদের মধ্যে কয়েকজন খড়গপুর স্টেশনে আসছিলেন ওড়িশাগামী ট্রেন ধরার জন্য। অন্য দিকের গাড়িটি যাচ্ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার উদ্দেশ্যে। আনন্দনগরের কাছে ২টি গাড়ির মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মারুতি ভ্যানের চালক সঞ্জয় ধাড়া, ২৬ এবং মারুতি ভ্যানেই থাকা আরও এক যুবক ২২ বছরের ধনু বাউরির এরা বাঁকুড়া জেলার বানীচর গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে বিপরীত দিক থেকে আই-টেন গাড়িতে থাকা চন্দ্রকোনার বাসিন্দা সুমন রায় বলে এক ৪০ বছরের যুবকের মৃত্যু হয়। আহত হন ২টি গাড়ির আরও ৫যুবক।
অতরাতে ঘটনাটি ঘটনার সময় রাস্তায় জনপ্রানী কেউ ছিলনা বললেই চলে। আশেপাশের দোকানে ঘুমিয়ে থাকা কিছু মানুষ এবং দোকানের নিরাপত্তারক্ষীরা সংঘর্ষের শব্দে ছুটে আসে। খবর পেয়ে পৌঁছে যায় পুলিশও। প্রায় দেড় ঘন্টার প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা সম্ভব হয় দুমড়ে যাওয়া গাড়ির মধ্যে খাঁচা বন্দী হয়ে থাকা মৃত ও আহতদের।
এঁদের সবাইকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে গুরুতর কয়েকজন আহতকে মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জানা গেছে এরমধ্যে মারুতি ভ্যানে থাকা ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আরও জানা গেছে ট্রেন ধরার তাড়া থাকার জন্যই মারুতির গতিবেগ অত্যন্ত দ্রুতছিল যে কারনে শেষ মুহূর্তে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়নি।