নিজস্ব সংবাদদাতা: সার্ভার রুমে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলি ভাঙচুর চালায়নি বলে ঢোঁক গিলল জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ও মহিলা হোস্টেলে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল এবিভিপির ছেলের। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছিল ছাত্রসংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ এবং এক অধ্যাপিকার। সেই গেরুয়া গুণ্ডামিকে নরম করে দেখানোর জন্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার রুমে ভাঙচুর করেছিল ঐশীরা । ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়াকে বন্ধ করে দিতে চাইছিল তারা। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে কেউ বা কারা এই হামলা চালায়। বিষয়টি নিয়ে ঐশীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিকৃত প্রচার চালায় বিজেপির মিডিয়া সেল। কিন্তু ঐশীর ‘নিম্ন মেধা ‘র মত এখানেও গেরুয়া প্রচারের পর্দা ফাঁস হয়ে গেল।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এক ব্যক্তির দায়ের করা একটি আরটিআইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে বয়ান বদল করল। ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার রুমে ভাঙচুর করা হয়নি। এমনকী অক্ষত রয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ ও বায়োমেট্রিক হাজিরা ব্যবস্থাও। বরং ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেই সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এক সমাজকর্মীর করা আরটিআইয়ের জবাবে এমনটাই জানিয়েছে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের জবাব সামনে আসার পর থেকেই প্রশ্নের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম জগদীশের দাবি। ৫ জানুয়ারি দায়ের করা এফআইআরে তিনি জানিয়েছিলেন, “৩ জানুয়ারি একদল পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়েক সার্ভার রুমে ভাঙচুর চালিয়েছিল।” সিসিটিভি যাতে কাজ না করে তা নিশ্চিত করতেই এই হামলা ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন উপাচার্য। কিন্তু আরটিআইয়ের পর তাঁর সেই অভিযোগকে মিথ্যে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করছেন পড়ুয়াদের একাংশ।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
গত ৪ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে ঢুকে বামপন্থী পড়ুয়াদের মারধর করে একদল দুষ্কৃতী। অভিযোগের তির এবিভিপি এর সদস্যদের বিরুদ্ধে। তবে ক্যাম্পাসে ঢুকে মারধরের ঘটনার কোনও সিসিটিভি ফুটেজ মেলেনি। ৫ জানুয়ারি দায়ের করা এফআইআরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, ৪ জানুয়ারির হামলার বীজ পোঁতা হয়েছিল ৩ জানুয়ারি। হামলার প্রমাণ যাতে না থাকে, তা নিশ্চিত করতেই একদল ছাত্র সার্ভাররুম অর্থাৎ সেন্টার অফ ইনফরমেশন সিস্টেম কক্ষের কাঁচের দরজা ভেঙেছিল। সার্ভার আর যাতে কাজ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে সেখানেও হামলা চালিয়েছিল৷ ফাইবার অপটিক্স ও বিদ্যুৎ পরিষেবাও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছিল৷ এমনকী ঘরের বায়োমেট্রিক ব্যবস্থাও ভেঙে ফেলা হয়েছিল৷ তাই ৪ জানুয়ারি সেন্ট্রাল ও নর্থ গেটে পড়ুয়াদের উপর হামলার নিরবিচ্ছিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ মেলেনি।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
উপাচার্যের সেই দাবির বিরোধিতা করেছিলেন ঐশী ঘোষ-সহ বামপন্থী ছাত্র নেতারা। এরপরই এক সমাজকর্মী ঘটনার সত্যতা জানতে চেয়ে ‘জীবন ও সত্যতা’ ক্লজের অন্তর্গত আরটিআই করেন। সম্প্রতি তার জবাব দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যহত হয়েছিল। তাই নিরবিচ্ছিন্ন ফুটেজ মেলেনি। এখন প্রশ্ন উঠছে ঐশীদের ওপর হামলার ঘটনায় কি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ জড়িত ছিল। তারাই বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে পরিকল্পনা মাফিক ব্যাহত করেছিল, যাতে সিসিটিভি ফুটেজে হামলার ছবি না ধরা পড়ে!