নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের তরুন চিকিৎসক ডঃ সুরেন্দ্র নাথ বেরার স্ত্রীকে সরকারি চাকরির নিয়োগ পত্র তুলে দিলেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার খড়গপুর বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের প্রশাসনিক সভায় ডঃ সুরেন্দ্র নাথ বেরার স্ত্রী স্বাতী বেরাকে নিজের হাতে নিয়োগ পত্র তুলে দেন মূখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয় পাশাপাশি তিনি এও ঘোষণা করেছেন যে হাতির হামলায় যে সমস্ত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে তাঁদেরও পরিবার পিছু একজন করে হোম গার্ডের চাকরি পাবেন।
উল্লেখ্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ৩৫ বছর বয়সী এই তরুণ চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত এক প্রসূতির সিজার করার পরই নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলেই জানা যায়। এরপরই তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে প্রায় ১২ দিন চিকিৎসা চলার পর ৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় ডঃ বেরার। পিংলা থানার জলচকের বাসিন্দা নিজের বাবা মা দাদা বৌদি ছাড়াও নিজের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে রেখে মারা যান। ওই দুই সন্তানের একজনের বয়স ৪বছর, অন্যজনের মাত্র ৩মাস।
এই স্বল্প বয়সী চিকিৎসক নিজের পেশাগত জায়গায় যেমন দক্ষ ছিলেন তেমনই ছিলেন নিজের জন্মভূমির প্রতি অত্যন্ত কর্তব্যপরায়ন। সপ্তাহে ৫দিন মেডিক্যাল কলেজে চাকরি করার পর নিজের গ্রামের বাড়ি জলচক ও পার্শ্ববর্তী মালিগ্রামে আসতেন গ্রামের প্রসূতি মায়েদের পরামর্শ দান ও চিকিৎসা করতে।
তাঁর মৃত্যুর পর শুধু তাঁর গ্রাম বা থানা কিংবা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাই নয়, শোকের ঝড় বয়ে যায় রাজ্যে এমনকি দেশের চিকিৎসক মহলেও। চিকিৎসকদের সর্ব ভারতীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল আ্যশোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দাবি ওঠে এই প্রয়াত তরুণ চিকিৎসকের পরিবারকে যেন যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয় সরকার। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্বয়ং মূখ্যমন্ত্রী সেই দাবির মান্যতা দিলেন।
তাঁর মৃত্যুতে কোভিড যোদ্ধাদের জন্য সরকারি ক্ষতিপূরণ বাবদ আগেই ১০লক্ষ টাকা দিয়েছিল সরকার। পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী স্বাতী বেরা কে সরকারের তরফে একটি সরকারি চাকরি নিয়োগ পত্র দিলেন মূখ্যমন্ত্রী। সরকারের পক্ষ থেকে আধিকারিকরা দ্রুত তাঁর কর্মক্ষেত্রে যোগদানের জন্য তাঁকে যাবতীয় সহায়তা করবেন। পাশাপাশি জঙ্গল মহলে যাঁরা হাতির হামলায় মারা যাচ্ছেন তাঁদেরও তালিকা তৈরির কথা বলেন মূখ্যমন্ত্রী। সেই সব পরিবারের একজন কর্মক্ষম ব্যক্তিকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে।