নিজস্ব সংবাদদাতা: বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লা খুনে ব্যবহৃত হয়েছে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র এবং তা পুলিশের কাছ থেকেই দুষ্কৃতিরা পেয়েছে। ভারতী ঘোষের এই তত্ত্বকেই মানছে বিজেপি এবং প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষের এই তত্ত্বকে মেনে নিয়েই দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পথে দল যা ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের দাবি অবধি পৌঁছে গেছে। বলা বাহুল্য অত্যন্ত কৌশলী এই দাবি যেখানে পুলিশের অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে সেখানে এই দাবির সমর্থনে যদি আদালতে জোরালো নমুনা পেশ করা যায় তবে আদালত সরকারকে সিবিআই তদন্তের আদেশ দিতে পারেন। বিজেপির লক্ষ্য সেটাই।
মনীশ খুন হয়েছেন রবিবার সন্ধ্যার কিছু পরেই। তারপরেই ভারতী ঘোষ পৌঁছে যান সেই হাসপাতালে যেখানে মনীশকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ভারতী ঘোষ জানিয়েছেন, ‘ আমি মনীশের দেহ দেখেছি। দেখলাম তাঁর গলায়, মুখমন্ডলে এবং শরীরে একাধিক গুলি রয়েছে। কী হয়েছিল আমি শুনেছি এবং বুঝেছি যে টিটাগড় থানার সামনে ঘটনাটি ঘটে। যারা এটা করেছে তারা যে অনেকক্ষন ধরে গুলি করেছেন তা নয়, খুব অল্প সময়ে এটা ঘটিয়ে তারা পালিয়েছে। এই ধরনের গুলি করাকে বলে ‘বার্স্ট ফায়ার’। অর্থাৎ এমন একটি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে যা কিনা একই সাথে অনেকগুলো গুলি করতে পারে। এটা অস্ত্র একমাত্র পুলিশের কাছেই থাকে যেমন স্টেনগান, মেশিনগান, একে-৪৭ ইত্যাদি। এই অস্ত্র এমনি অপরাধীদের কাছে থাকেনা।”
আমফানে দুর্নীতি বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নিতে সোমবার দক্ষিন ২৪পরগনার মন্দিরবাজারে বিডিও অফিস ঘেরাও অভিযানে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সহ সভানেত্রী জানান, “এই ধরনের ঘটনায় আমার কাছে খুনি ধরার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করা কারন এই অস্ত্রই সমস্ত কিছু পরিষ্কার করে দেবে।” যদিও তিনি সংশয় প্রকাশ করে বলেছেন, “এই অস্ত্র উদ্ধার করা হবেনা কারন অস্ত্র যেখান থেকে এসেছে সেখানেই ঢুকে গেছে।” বলা বাহুল্য পুলিশের দিকেই নিশানা করেছেন তিনি।
ভারতী ঘোষ এদিন আরও বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন পুলিশে কাজ করার সুবাদে আমি জানি এক্ষেত্রে যে বন্ধুক চালিয়েছে তার টার্গেট প্রিসিশন খুবই ভালো। অর্থাৎ যে এটা করেছে সে মারে, গুলি করে, দক্ষ হাত।” এই কথাগুলি ঘোষ বলেছেন মন্দিরতলার কর্মসূচিতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে।
কর্মসূচিতেও বক্তব্য রাখতে গিয়ে জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে ঘোষ বলেছেন, “যে সুন্দর ভাবে গুলি করা হয়েছে, যে নির্ভুল ভাবে গুলি করা হয়েছে তা একমাত্র করতে পারে কে?” জনতা আওয়াজ তুলেছে, ‘পুলিশ’। ভারতী ঘোষ বলেছেন, ‘বা! এখানকার মানুষ সত্যি খুবই বুদ্ধিমান।” ভারতী ঘোষ নিজেও বলেছেন, “পুলিশের সাহায্য ছাড়া এই কাজ করা অসম্ভব। ভারতী আরও বলেন, ‘একটা খুনের ঘটনা ঘটার খবর পাওয়ার পরেও টিটাগড় থানা এলাকায় পুলিশ কোনও নাকা করেনি অপরাধীদের ধরার জন্য।”
জানা গেছে গতকাল মনীশের দেহ দেখার পরই এই তত্ত্ব হাজির করেন দলের নেতাদের কাছে। কৈলাশ বিজয় বর্গীয় থেকে দিলীপ ঘোষ এমনকি অর্জুন সিংহ অবধি সোমবার সারাদিন জুড়েই এই বার্স্ট ফায়ারের তত্ত্ব আউড়ে গেছেন। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে ফিরহাদ হাকিম এই খুনের পেছনে দলের হাত সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন।