নরেশ জানা : ১০০ জনেরও বেশি আরটি/পিসিআর এবং ৩০০জনের আ্যন্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে। নেগেটিভ হলেই থাকতে পারবেন খড়গপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে। করোনা কালে এমনই সূচীছিদ্র নিরাপত্তায় হতে চলেছে অতিমারী কালে দক্ষিনবঙ্গের প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক। মূখ্যমন্ত্রীর এই অভূতপূর্ব স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা অনেকটাই মাওবাদী সন্ত্রাসের হাত থেকে মমতা ব্যানার্জীকে রক্ষা করার নিরাপত্তা বর্মের সঙ্গেই তুলনীয় বলে দাবি করছেন এই সভার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ” আক্রমন আক্রমনই, তা শারীরিক অথবা স্বাস্থ্যগত যাই হোক না কেন। আমাদের কাজ রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রীকে রক্ষা করা। এমনিতেই তাঁর বয়স ৬৫ বছরের উপরে যা কোভিড প্রটোকল অনুযায়ী সুপার হাই রিস্ক। এই অবস্থায় কোনো ঝুঁকি নেওয়া যায়না।”
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে মূখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে থাকবেন এমন পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিক এবং মঞ্চে বিদ্যুৎ সংযোগ, আলো, মাইক, চা জল স্ন্যাকস ইত্যাদি যাবতীয় কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন এমন শতাধিক ব্যক্তির আরটি/পিসিআর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে শুধু খড়গপুরের ৯০ জন মত রয়েছেন। এছাড়া মঞ্চের নিচে উপস্থিত থাকবেন এমন বিডিও, ওসি ইত্যাদি বিভিন্ন পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের আ্যন্টিজেন পরীক্ষা হবে।
মঙ্গলবার মূখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলেই একটি আলাদা ক্যাম্প করা হচ্ছে আ্যন্টিজেন নমুনা সংগ্রহের জন্য। সকাল ৯টা (সভা বিকাল ৪টায়)থেকে লাইন দিয়ে আ্যন্টিজেন পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে হবে। তারপর অপেক্ষা করতে হবে। যাঁদের নমুনা নেগেটিভ হবে তাঁরাই উপযুক্ত পাস নিতে হবে। অর্থাৎ সিকিউরিটি পাসের মতই করোনা পাস নিতে হবে। যাঁরা করোনা টেষ্ট ক্লিয়ার করবেন তাঁরা একটি কিটস পাবেন ভেতরে প্রবেশের জন্য। এই কিটসে ফেসশিল্ড, মাস্ক, গ্লোভস, স্যানেটাইজার ইত্যাদি থাকবে। উল্লেখ্য করোনা কালের কথা স্মরণ রেখেই এবার স্বল্প সংখ্যক আধিকারিকদের নিয়ে এই প্রশাসনিক সভা করছেন মূখ্যমন্ত্রী। কেবলমাত্র সরাসরি জনসংযোগে থাকে এমন দপ্তরের আধিকারিক যেমন ওসি, বিডিও, কর্মাধ্যক্ষ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ইত্যাদিরা সভাগৃহে ঠাঁই পাবেন। এছাড়া পূর্তদপ্তর,বন, কৃষি ইত্যাদি বিভাগের আধিকারিকরা পৃথকভাবে জায়েন্টস্ক্রিনে সভা দেখতে পারেন।
গত কয়েক বছর ধরেই মূখ্যমন্ত্রী তাঁর প্রশাসনিক সভার স্থান মেদিনীপুর শহরের পরিবর্তে খড়গপুর শহরে ইন্দায় অবস্থিত পূর্তদপ্তরের প্রাঙ্গনেই করছিলেন। ওখানেই মূখ্যমন্ত্রীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা বা দ্বিতীয় সার্কিট হাউস গড়ে তোলার ব্যবস্থা চলছে।মেদিনীপুর শহরের সঙ্কীর্ণ পরিসর ও যানজটের কারণেই এই বিকল্প ব্যবস্থা। চৌরঙ্গী থেকে ইন্দা লোকাল থানা অবধি রাস্তা সম্প্রসারন ও সৌন্দর্যের ব্যবস্থার মূলেও সেই একই তত্ত্ব কাজ করছে। এবার করোনা পরিস্থিতির মুখে ওই স্বল্প পরিসরে সভা সম্ভব নয় বলেই সভাস্থল বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক বা শিল্প তালুকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানেই এখন চলছে চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ। এখানে সভা শেষ করে চপারে ঝাড়গ্রামে যাবেন মূখ্যমন্ত্রী। রাজবাড়িতে রাত কাটিয়ে বুধবার ফের হাজির হবেন ঝাড়গ্রাম জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে।
ছবি: অচিন্ত্য ত্রিপাঠী