ওয়েব ডেস্ক : দেশে যেদিন করোনা মহামারীতে ১ লক্ষ মৃত্যু ছুঁয়েছে সেদিনই করোনার চাইতে বিজেপিকে আরও বড় মহামারী বলে কটাক্ষ করলেন পশ্চিম বাংলার মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাথরসে দলিত তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই গোটা দেশের মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে। সেই আগুনে ঘি ঢেলেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। নির্যাতিতার পরিবারের অনুমতি না নিয়েই দেহ দাহ করার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। গোটা ঘটনায় বিজেপির ভূমিকা নিয়ে সরকারের বিরোধীতা শুরু করেছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। শুক্রবার হাথরসে পৌঁছেও নির্যাতিতার পরিবারের সাথে দেখা করতে পারেননি তৃণমূলের ৫ সাংসদ। উল্টে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবারই কলকাতায় বিশাল প্রতিবাদ মিছিল করেন তৃণমূল। রাস্তায় নামেন খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের সভামঞ্চ থেকে বিজেপি–কে ‘সব থেকে বড় মহামারী’ বলে কটাক্ষ করেন মমতা।
এদিন মিছিল শেষে কাঁধে কালো কাপড় ও হাতে একটি টর্চ নিয়ে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে সভামঞ্চে ওঠেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রতিবাদ মিছিলে আচমকা কালো কাপড় নিয়ে উঠতে গেলেন কেন মমতা? সকলেই যখন এই প্রশ্নই মনে মনে ভাবছেন সেসময় মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজেই এর উত্তর দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “আমার হাতে টর্চ রয়েছে। এর পেছনে একটা কারণ রয়েছে। সারা দেশে দলিত, সংখ্যালঘু, কৃষক, গরিব মানুষের ওপর অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছে বিজেপি। তাঁদের অন্ধকারে ঠেলে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আর তাঁদের আলোতে আনার জন্যই আজ আমার হাতে টর্চ। স্বৈরাচারী বিজেপি–র বিরুদ্ধে তৃণমূলের এই আন্দোলন চলছে এবং চলবে। আর তার প্রতীক হতে পারে এই টর্চ।”
একই সাথে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে দলিত ও সংখ্যালঘুদের ওপর গেরুয়া শিবিরের অত্যাচারের প্রসঙ্গে এদিন তৃণমূল নেত্রী বলেন, “ভোটের সময় দলিতের বাড়িতে খাবার খায় ওরা। ছবি–ভিডিও তোলানো হয়। কিন্তু সেই খাবার আসে হোটেল থেকে। আর ভোট মিটলেই দলিতদের ওপর শুরু হয় অত্যাচার। এদিকে, আমি কিছু করলেই বলে মুসলিমদের তোষণ করছি। যখন মুসলিমরা বিপদে পড়েন তখন আমি মুসলিম। যখন আদিবাসীরা বিপদে পড়েন তখন আমি আদিবাসী। আজ দলিতরা বিপদে পড়ছেন, তাই আজ আমি দলিত।” এদিন বিজেপিকে সরাসরি কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হিন্দুরা বিপদে পড়লে তো আমার পদবী জানতে চাও না! মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদুয়ারা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতি করে না।”
সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “রাতের অন্ধকারে নিরবে নির্যাতিতা ওই মেয়েটির দেহ জ্বালিয়ে দিল যোগী সরকার। দিল্লিতে দাঙ্গা হল, নর্দমায় দেহ পড়ে ছিল। কিন্তু কেউ জানে না ক’জন মারা গিয়েছেন। কত পরিযায়ী শ্রমিক মারা গেল। বিজেপি বলছে, তথ্য নেই। কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন। বিজেপি বলছে, তথ্য নেই।’ মমতা এদিন দেশবাসীকে সাবধান করে বলেন, ‘বিজেপি দেশের লজ্জা। পরিযায়ী শ্রমিক কাঁদছে। কৃষকরা কাঁদছে। দুর্ভীক্ষ আসছে জেনে রাখুন।”