নিজস্ব সংবাদদাতা: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার করোনা পরিস্থিতি কিছুটা হলেও ঢিমে তালে চলছে। প্রথম দিকের তিনশ আক্রান্ত পেরিয়ে যাচ্ছেনা ঠিকই তবে ১০০র নিচেও নামছেনা। ১৯শে সেপ্টেম্বর জেলায় আক্রান্তের পরিমান ছিল ১৮৬ জন, ৭ দিনের মাথায় ২৫শে সেপ্টেম্বর সংখ্যাটা ১৮৪। এর মধ্যে কখনও ১০৯, কখনও আবার ১২৬ হয়েছে। মোট কথা ২০০ মধ্যেই রয়ে যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাভাবিক চিত্র অনুযায়ী তাই জেলার বিভিন্ন থানা এলাকাতেও করোনার গতি ঢিমে তালে। গত ২৪ ঘন্টায় (২৫ সেপ্টেম্বর) খড়গপুর এবং মেদিনীপুরে আরটি/পিসিআর পরীক্ষায় ৩৮ জনের পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে যার মধ্যে খড়গপুরের ২২জন রয়েছে বাকি ১৬জন মেদিনীপুর কোতওয়ালি থানা এলাকায়।
খড়গপুরের এই ২২জনের মধ্যে ১৪জনের রেল যোগ রয়েছে। ৬ জন শহরের এবং ১জন খড়গপুর গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা। রেলেরও ১৫ জনের ১জন খড়গপুর গ্রামীন এলাকার অর্থাৎ খড়গপুর শহরের বাসিন্দা ২০ জন। রেল যোগ রয়েছে এমন আক্রান্ত রেলের ৬৫ বছরের অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন রেলকর্মীর বাড়ি গোকুলপুর এলাকায়। অন্যদিকে খড়গপুর গ্রামীন অংশের সালুয়ার সন্নিকটে বাঘুয়াশোল গ্রামের এক ৬০ বছরের বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও ১ জনের আইআইটি যোগ রয়েছে।
খড়গপুর শহরের পুলিশ লাইনে ৩৯বছরের এক জওয়ান আক্রান্ত হয়েছেন । এখানেই ৪৮ ঘন্টা আগে ৮ জওয়ানের সংক্রমন ধরা পড়েছিল। পুরাতন বাজার এলাকায় ২১ বছরের ১ যুবতী আক্রান্ত হয়েছেন। ১২নম্বর ওয়ার্ড দেওয়ানমাড়ো নতুনপল্লীতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ বছরের যুবক অন্যদিকে ৩৯বছরের এক মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন সুভাসপল্লী পদ্মপুকুরের উত্তরপাড়ে। ১৬ নম্বর ওয়ার্ড নিমপুরার ভগবানপুরে আক্রান্ত ৪১ বছরের ব্যক্তি। প্রেমবাজার হিজলী সোসাইটি এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭০বছরের প্রবীন নাগরিক।
রেল এলাকায় ৩৭ বছরের এক টেকনিশিয়ান ২৭ বছরের স্ত্রী সহ আক্রান্ত হয়েছেন। এঁরা বুলবুল চটি এলাকার বাসিন্দা। ৪০ বছরের রেল হাসপাতালের আয়া আক্রান্ত হয়েছেন। ৩৩ বছরের এবং ৫৭ বছরের দুই রেল কর্মী করোনা পজিটিভ বলে চিহ্নিত হয়েছেন যাঁরা গোপালনগর ও সারদাপল্লীর বাসিন্দা। রেল এলাকার মধ্যে থাকেন এরকম আরও ৮জন আক্রান্ত হয়েছেন যাঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীও রয়েছেন। আইআইটি খড়গপুরের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী যিনি তালবাগিচার বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছেন।
মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটিতেই এদিন সর্বাধিক আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। একই পরিবারের ৫৮ বছরের বাবার সাথে আক্রান্ত ২৬ বছরের যুবক। আলাদা করে রাঙামাটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬ ও ৪৩ বছরের দুই ব্যক্তি। পুলিশ লাইনে আক্রান্ত হয়েছেন একই পরিবারের ৫৫বছরের মহিলা ও ১১বছরের বালক। নজরগঞ্জে ৩৮ বছরের যুবকের দেহে করোনার অস্থিত্ব মিলেছে। ৩২ বছরের এক পুরুষ স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শুধুমাত্র মেদিনীপুরকোতোয়ালি ঠিকানায় রয়েছেন ৭জন যাঁর মধ্যে দুটি পরিবারের ৫জন রয়েছেন। ৪২ বছরের এক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন গুড়গুড়িপাল এলাকায়।
শহরের এই অবস্থার পাশাপাশি মফঃস্বল ও গ্রামীণ এলাকাতেও করোনা চিত্র মোটের ওপর একই রকম। গড়বেতা, দাসপুর ও দাঁতন এলাকায় মারাত্মক পারিবারিক সংক্রমন ধরা পড়েছে। গড়বেতায় ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন যাঁর মধ্যে লেদাকামার, ফতেসিংপুর ও গড়বেতার তিন পরিবারের ৯ জন রয়েছে। বাকিরা আক্রান্ত হয়েছেন তালডাংরা, শ্যামনগর, শ্রীধরপুরে। দাসপুরে ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন যার ৫ জনই শ্রীরামপুর ও বালিঘাটার ২টি পরিবারের। অন্যজন খুকুড়দহের শ্রীপুরের।
ডেবরায় আক্রান্ত ১০জনের ৫জন চাক্কুমার ও হরিহরপুরের ২টি পরিবারের। বাকিরা ডেবরা বাজার, লোয়াদা, কালুয়া আকুব, রাধামোহনপুর, ভাঙতোড়ের। বেলদা থানার মহম্মদপুরে ২শিশু সহ আক্রান্ত ৫ জন। এছাড়াও সায়াপাড়া ও বেলদায় ১জন করে আক্রান্ত। ঘাটালের বরোদা চৌকানে ২ জন, চন্দ্রকোনার মিত্রমোহনপুর, পিয়াসালা, খিড়কি বাজারে আক্রান্ত ৩ জন। ক্ষীরপাইয়ের শ্রীনগর, ভবানীপুর, রাজমাধবপুর, কাশিগঞ্জ,আমড়াপাট, ও ক্ষীরপাইয়ে আক্রান্ত ৭জন। এছাড়া সবংয়ের মালপাড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ১ জন।