নিজস্ব সংবাদদাতা: গত মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীতে কয়েকদফা জেরার পর এবার ছত্রধর মাহাতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চাইল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA আর তারপরই হাসপাতালে ভর্তি হলেন মাওবাদীদের ফ্রন্টাল অর্গানাইজেশন জনসাধারণের কমিটির এই নেতা। উল্লেখ্য সিপিআইএম নেতা প্রবীর মাহাত এবং রাজধানী এক্সপ্রেস অপহরণ এই দুটি মামলায় তৃণমূলের বর্তমান রাজ্য কমিটির সদস্য ছত্রধর মাহাতের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে NIA. মাহাত আগেই জানিয়েছিলেন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করা হয়েছে। আর সে কারণেই এই তদন্ত শুরু করেছে এই জাতীয় সংস্থা।
NIA আগেই আদালতকে জানিয়েছিল ছত্রধরকে তাঁরা নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চান। আদালত এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সামনেই শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মোতাবেক ৩১ জনকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। শুক্রবার কলকাতায় সেই বিশেষ আদালতে এই হাজির ছিলেন ছত্রধর মাহাত সমেত ২৭ জন। যদিও এদিন গায়ে জ্বর থাকায় আদালতে প্রবেশ করেননি ছত্রধর। দীর্ঘক্ষণ গাড়িতে বসে ছিলেন তিনি। শুনানি শুরু হতেই শারীরিক অসুস্থতা বোধ করেন তিনি। এর পর তাঁকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২০০৯ সালে সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুনে ছত্রধর সহ ৪ জনকে হেফাজতে নিতে চেয়ে এদিন আবেদন করেন NIA-র আইনজীবী। যাঁর মধ্যে আরও এক তৃনমূল নেতা রয়েছেন। ওই তৃনমূল নেতাও এক সময় জনসাধারণের নেতা ছিলেন। উল্লেখ্য ছত্রধর মাহাতের বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা ছিল যাঁর মধ্যে কয়েকটি মামলায় রেহাই পেলেও কয়েকটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয় তাঁর। অর্থাৎ এই মামলাগুলিতে দোষী প্রমাণিত হন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলেও রাজ্য সরকার তাঁর সাজার মেয়াদ কমানোয় কয়েকমাস আগে মুক্তি পান তিনি। এরপরই তৃনমূলে যোগ দেন তিনি।
এরপরই গত জুলাইয়ে জঙ্গলমহল উদ্ধারের লক্ষ্যে ছত্রধরকে তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য মনোনীত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেও অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে অনেকগুলি মামলা থেকে গিয়েছে সেরকমই দুটি মামলার তদন্তভার নিয়েছে NIA. তারপরেও কতগুলি মামলায় তাঁকে একের পর এক জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন মনে করলে করতে পারে কারন NIA হল অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে বিশেষ ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত। আর মাওবাদীদেরকে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসীদের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করে ভারত সরকার। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মাহাতের নানাবিধ পরীক্ষা চলছে বলে জানা গিয়েছে।