গুলির শব্দে প্রাণভয়ে ছুটছেন মানুষ |
নিজস্ব সংবাদদাতা: ” দেশ কো গদ্দারোঁ কো, গোলি মারো শালো কো।” দিল্লিতে সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিছিল করতে গিয়ে এমনই শ্লোগান তুলেছিলেন বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর। আর তার পর থেকেই একের পর এক গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেই চলেছে আন্দোলনকারীদের ওপর। রবিবার রাতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখল দিল্লি এবং গত চারদিনে এটা হল তৃতীয় গুলি চালানোর ঘটনা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এবার ঘটনা দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। যেখানে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে রবিবার রাতেও বিক্ষোভ চলছিল। সেই সময় স্কুটিতে চেপে দুই ব্যক্তি সেখানে হাজির হয় এবং শূন্যে গুলি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধী আন্দোলনে গত দু’মাস চলছে রাজধানী দিল্লির বুকে। আর সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালানোর সূত্রপাত গত সপ্তাহে। তার পর থেকে গত চারদিনে এই নিয়ে তৃতীয় বার গুলি চলল সেখানে। ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়াদের নিয়ে গঠিত জামিয়া সমন্বয় কমিটির নেতৃত্বে রবিবার রাতেও এক দফা বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ নম্বর গেটের ঠিক কাছে সেই বিক্ষোভে পড়ুয়ারা ছাড়াও বহু মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আন্দোলনকারী দের বক্তব্য, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ লাল রঙের একটি স্কুটিতে চেপে সেখানে হাজির হয় দু’জন এবং স্কুটি থামিয়ে বেশ কয়েক বার শূন্যে গুলি ছুঁড়ে চম্পট দেয়। স্কুটি থেকে নামেনি তারা। ঘটনায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। প্রান ভয়ে এদিক ওদিক ছুটতে থাকেন সাধারণ মানুষ। আন্দোলনকারীরা জানান, হামলাকারীদের মধ্যে এক জনের পরনে ছিল লাল রঙের জ্যাকেট।
জামিয়া নগর পুলিশ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। তাঁদের বক্তব্য ঘটনা সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। হামলাকারীরা স্কুটিতে নাকি গাড়িতে এসেছিল এ নিয়েও দ্বিমত রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ সুপার কুমার জ্ঞানেশ বলেন, ‘‘খবর পেয়েই পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে গুলির খোল বা সেই জাতীয় কিছু মেলেনি। কেউ বলছেন দুষ্কৃতীরা স্কুটিতে চেপে এসেছিল, তো কেউ আবার বলছেন গাড়িতে চেপে এসেছিল।’’
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
যদিও আন্দোলনকারীদের বয়ান রেকর্ড করে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় (খুনের চেষ্টা) এবং অস্ত্রআইনের ২৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ ও ৭ নম্বর ফটক সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এসিপি জগদীশ যাদব। আন্দোলনকারীরা সোশ্যালমিডিয়ায় একটি ভিডিও আপলোড করেছেন যাতে দেখা যাচ্ছে জনতা প্রানভয়ে এদিক ওদিক ছুটছেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
উল্লেখ্য নাগরিক সংশোধিত আইন বিরোধী আন্দোলনে প্রথম গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে গত সপ্তাহে। প্রকাশ্য দিনের আলোয় পুলিশের সামনেই মিছিলরত পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে গুলিয়ে চালায় বছর ১৭-র এক কিশোর। তাতে শাদাব ফারুখ নামের এক কাশ্মীরি পড়ুয়া জখন হন। পরের ঘটনা গত শনিবার, পুলিশ ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে শাহিন বাগে গুলি চালায় কপিল নামে আরেক যুবক। তার ঠিক ২৪ঘন্টার মধ্যেই রবিবারের তৃতীয় ঘটনা।
বিরোধীদের দাবি বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুরের সেদিনের সেই ‘উস্কানিমূলক’ শ্লোগানই উদ্বুদ্ধ করেছে উগ্র হিন্দুত্বপন্থীদের যার পরিনতিতেই পর পর ঘটনা ঘটেই চলেছে।