নিজস্ব সংবাদদাতা: ভিন রাজ্যে বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্য গুলিতে এ নজির ভুরি ভুরি। মায় পুলিশকে দিয়ে জুতো পরানো, পুলিশকে চড় থাপ্পড়ে ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় মাঝে মধ্যেই দেখা যায়। এবার এরাজ্যেও নেতা মন্ত্রীদের আজ্ঞাবহ হওয়ার নিদর্শন মিলল। যেভাবে এক পুলিশ আধিকারিককে মাথায় অশোকস্তম্ভ মার্কা টুপি আর পুলিশের উর্দি পরে মন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে গেলেন তাতে যথেষ্টই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
রবিবার বীরভূমের রামপুরহাট থানার এএসআই রঞ্জন দত্তের এই কান্ডে যথেষ্টই অস্বস্তিতে জেলা পুলিশ। সম্ভবত সেই অস্বস্তি কাটিয়ে উঠতেই জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংয়ের দাবি করলেন যে ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেন না। ঘটনা না জেনে মন্তব্য করবেন না। যথারীতি এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে আসরে নেমেছে বিরোধীরা। ‘রাষ্ট্রশক্তি তৃণমূলের পায়ে মাথানত করল’, কটাক্ষ বিরোধীদের। তদন্ত করে ওই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
রবিবার রামপুরহাট থানায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। ‘সম্মানীয়’ বলে একটি প্রকল্প পুলিশের তরফে শুরু করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী তথা তৃণমূলের বীরভূম জেলা চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য, রামপুরহাট ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পান্থ দাস। অনুষ্ঠান থেকে রামপুরহাট পুরসভা এলাকায় ‘সম্মানীয়’ প্রকল্পের জন্য দু’টি দল গড়ে দেওয়া হয়। একটি দলের প্রধান রামপুরহাট থানার এএসআই রঞ্জন দত্ত। মঞ্চে তাঁর হাতে ‘সম্মানীয়’ প্রকল্পের নিয়মকানুনের কাগজপত্র তুলে দেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। কাগজ হাতে নেওয়ার পরেই মঞ্চে আশিসবাবুকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন ওই পুলিশ আধিকারিক। এ নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
উর্দি পরে প্রণামকে ইস্যু করে আসরে নেমেছে বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সঞ্জীব বর্মন বলেন, “তৃণমূলের আমলে সবই সম্ভব। এ রাজ্যে আইন তৃণমূলের তৈরি করা। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুশি করতে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় পায়ের কাছে অবনত। সংবিধান এদের কাছে তুচ্ছ। পুলিশ এখানে পায়ের নিচে মাথা নত করে বোঝাতে চাইছেন তিনি কতটা বাধ্য। এই পুলিশ নিয়মনীতির কোনও তোয়াক্কা করে না।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, “ওই পুলিশ অফিসার পোশাক পরে প্রণাম করে বুঝিয়ে দিলেন তিনি আশিসবাবুর অতি বড় শিষ্য। পুলিশের পোশাক পরে চাকরিতে যোগদানের আগে রাজধর্ম পালনের শপথ নিয়েছিলেন। মাথায় অশোকস্তম্ভ লাগিয়ে পায়ের কাছে মাথা নত করে তিনি রাষ্ট্রশক্তিকে অবমাননা করেছেন। আমরা দাবি করব, নিরপেক্ষভাবে কাজ করুন। রাজধর্ম পালন করুন।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সঞ্জয় অধিকারীও এই ঘটনার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে প্রণাম করতেই পারেন। কিন্তু যখন পোশাক পরে থাকবেন তখন তিনি প্রণাম করতে পারেন না। আমি দাবি করছি এই ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।” যদিও বিষয়টি মুখে কুলুপ এঁটেছেন অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক।