নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা আক্রান্তদের সুস্থ করার প্রয়োজনে দরকার হতে পারে করোনা মুক্ত হওয়া মানুষদের প্লাজমা। তাই ICMR বা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চের পরামর্শে এ রাজ্যে তৈরি হয়েছে ২০টি বিশেষ প্লাজমা ব্যাংক। এর একটি রয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। সরকারের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে করোনা মুক্ত হওয়া মানুষ যেন এগিয়ে আসেন প্লাজমা দিতে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এলেন বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার নেত্রী মঞ্জু মহান্তি। নিজের অষ্টাদশী কন্যা প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে মঙ্গলবার মেদিনীপুর মেডিক্যালের প্লাজমা ব্যাঙ্কে রক্ত দিলেন মা ও মেয়ে।প্লাজমা ব্যাঙ্কের চিকিৎসা কর্মীরাও জানালেন এই প্রথম প্লাজমা সংগ্রহের জন্য কোনও করোনা মুক্তর রক্ত পেলেন তাঁরা।
পশ্চিম মেদিনীপুর বেলদা মফঃস্বল শহরের নন্দ মার্কেট এলাকার বাসিন্দা মঞ্জু মহান্তি রাজ্য নেত্রীর পাশাপাশি তমলুক সাংগঠনিক জেলারও পর্যবেক্ষক। একসময় তিনটি জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন। মঞ্জু জানিয়েছেন, ‘বেলদার রেল স্টেশন আবাসনে এক বান্ধবীর কাছে গিয়েছিলাম দেখা করতে। জানতে পারি করোনা পজিটিভ হয়েছেন তাঁরা। এরপর নিজে থেকেই পরীক্ষা করাই , পজিটিভ আসে। প্ৰথমে বাড়িতে ছিলাম কিন্তু হালকা উপসর্গ আসতে শালবনী করোনা হাসপাতালে ভর্তি হই। ১৫ই জুলাই আমার পজিটিভ ধরা পড়ার পরই ১৬তারিখ মেয়ের ধরা পড়ে।ওকে নিয়ে যাওয়া হয় আয়ুসে। ১১দিনের মাথায় দুজনেই করোনা মুক্ত হই।
তখুনি মনে মনে ঠিক করেছিলাম যদি অন্য কোনো মানুষের করোনা মুক্তির জন্য আমাদের কিছু করার থাকে আমরা করব। এরপর স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে আমাদের ফোন করে জানানো হয় আমরা প্লাজমা দিতে রাজি কিনা? আমরা রাজি হয়ে যায়। এখানে রাজনীতি নয় মানুষই আমাদের কাছে অগ্রাধিকার।
প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছেন, এই কদিন আগেই উচ্চ মাধ্যমিক রেজাল্ট বের হল। এখনো কোথাও ভর্তি হয়ে ওঠা হয়নি। তার মধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়ি। মা খুব সাহস জুগিয়েছিল। এবারও মা বললেন, ‘চল এবার অন্যদের ভাল করার ভূমিকা নিতে হবে। এরপরই ঠিক করি দুজনে মিলে প্লাজমা দেব। কিন্তু তখনও ভাবিনি যে আমরাই আমাদের জেলাতে প্রথম প্লাজমা দিচ্ছি। খুব ভাল লাগছে।”
বেলদার নন্দ মার্কেটের এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, “মা মেয়ে যেদিন করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন তখন তাঁদের সেই আনন্দের নাচ আমাদের খুব ভাল লেগেছিল আর আজ মা ও মেয়ের এই প্লাজমা দান বেলদা বাসী হিসাবে গর্বিত করল আমাদের। ভাল থাকুন দুজনেই।”