ওয়েব ডেস্ক : সাধারণত কোনও বিক্ষোভ হলে পুলিশ তা সামাল দেন! কিন্তু যদি উল্টোটা হয়, পুলিশই যদি বিক্ষোভে সামিল হন তবে কেমন হয়? শুক্রবার কলকাতা মেডিক্যাল চত্বরে এমন ঘটনাই সামনে এসেছে। যা দেখে স্বাভাবিকভাবেই হতভম্ব অন্যান্য রোগী পরিবার। করোনা পরিস্থিতিতে মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিনই রোগী পরিবারের নানা অভিযোগ শিরোনামে আসে। এবার সেই তালিকায় এলেন পুলিশকর্মীরাও। করোনা আবহে দিন রাত এক করে মানুষকে সচেতন করে চলেছেন পুলিশকর্মীরা। করোনাযোদ্ধা হিসেবে প্রথম সারিতে রয়েছেন তারা৷ এদিকে চিকিৎসাক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের মতো তাদেরও চিকিৎসা গাফিলতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মাঠে নেমে ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত একাধিক পুলিশকর্মী। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হচ্ছে বেড নেই। এতে স্বাভাবিকভাবেই চূড়ান্ত হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে পুলিশকর্মীদের। এর জেরে শুক্রবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে বিক্ষোভ দেখান পুলিসকর্মীরা। ঘটনায় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে করোনা যোদ্ধাদের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।
সংক্রমণের শুরুতেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে সম্পূর্ণ করোনা হাসপাতাল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু আদতে দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশকর্মীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও দায়সাড়া ভাব দেখাচ্ছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে। মেডিকেল কলেজের ভিতরে বউ বাজার থানার পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। তারাই হাসপাতালের ভিতরে গার্ডে রয়েছে৷ তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত। জানা গিয়েছে শুক্রবার আরও এক পুলিশকর্মী করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে যান অন্যান্য পুলিশকর্মীরা৷ অভিযোগ, সে সময় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে বেড নেই বলে জানানো হয়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ভর্তির জন্য বারংবার অনুরোধ করা হলে তাদের চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হয়।
পুলিশকর্মীদের অভিযোগ, দু’ঘণ্টা বেশি সময় কেটে যাওয়ার পরও ওই পুলিশকর্মীকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। এদিকে পুলিশকর্মীর শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে৷ এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে পুলিসকর্মীরা। হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তারা। জানা গিয়েছে, এই প্রথম নয় এর আগে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীকে ভর্তি করাতে গেলেও একই অভিজ্ঞতার মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনাযোদ্ধাদের চিকিৎসায় যাতে কোনোরকম অসুবিধা না হয় হাসপাতালগুলিকে সেদিকে নজর রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আদতে দেখা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর কোনো কথার তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করে চলেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। এর জেরে করোনা আবহে প্রতিদিনই চিকিৎসার গাফিলতি সহ একাধিক অভিযোগে শিরোনামে আসছে মেডিক্যাল কলেজ।