ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আহতরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা: নিরন্তর ‘সেফ ড্রাইভ আর সেভ লাইফ’য়ের মন্ত্র আউড়ে যাওয়া পুলিশেরই বেপরওয়া বাইক চালানো এবং সংঘর্ষের ফলে মৃত্যুর স্বাক্ষী থাকল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা থানার ডেবরা-বালিচক রাজ্য সড়ক। হেলমেট হীন দুরন্ত গতির একটি বাইকে থাকা তিন পুলিশ কর্মী শুধু নিজেরাই নিহত বা আহত হননি পাশাপাশা প্রান বিপন্ন করেছেন অন্য দুই বাইক আরোহীরও। আর ঘটনায় চুল প্রমান দুরত্ব থেকে বেঁচে গিয়েছেন সকন্যা এক শিক্ষক যিনি তাঁর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীনী কন্যাকে নিয়ে ফিরছিলেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
প্রত্যক্ষদর্শী এবং দুর্ঘটনায় আহতদের প্রাথমিক ভাবে উদ্ধারকার্য শুরু করেছিলেন যে শিক্ষক তিনি কিংকর অধিকারী। অধিকারী জানান,”আমি অর্জুনী হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর মেয়েকে নিয়ে ফিরছিলাম। ডেবরা অডিটোরিয়াম হলের সামনে যখন পৌঁছেছি তখন বিপরীত দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে তিনজন মধ্যবয়সী যুবক প্রায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে আসে তীরের মত এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুজন আরোহী থাকা বিপরীত দিকের একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ভয়ঙ্কর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুটি বাইকের পাঁচজন ছিটকে পড়ে চারদিকে। দুর্ঘটনা ঘটে আমার বাইক থেকে ১০ফুটের মধ্যেই। পেছনে বসে আমার সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়ে। আর একটু হলেই আমার সঙ্গে ঘটে যেতে পারত। ভাবলে এখনও শিউরে উঠছি।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
স্থানীয় সুত্রে খবর মঙ্গলবার বিকেল তিনটে নাগাদ বাইকে করে যে হেলমেট বিহীন তিন আরোহী বালিচক থেকে ডেবরা থানায় যাচ্ছিলেন তিন এনভিএফ কর্মী। আর উল্টো দিক থেকে আসছিলেন দুই বাইক আরোহী। অডিটোরিয়াম পেরিয়ে একটি বাঁকে নিয়ন্ত্রন রাখতে না পেরে অপর দিক থেকে আসা বাইকের ওপর কার্যত আছড়ে পড়ে পুলিশ কর্মীদের বাইকটি। ঘটনাস্থলেই ঘটনাস্থলেই রামতনু মহাপাত্র বলে এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। আহত হয়েছে আরো দুজন পুলিশকর্মী ও বাকী দুজন। তাদেরকে প্রথমে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আশংকা জনক অবস্থায় তাদেরকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
কিংকর অধিকারী জানান, ” আমি সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখে লোকজনকে নিয়ে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৎক্ষণাৎ উদ্যোগ নিই। কোন লোক এগিয়ে আসেনি প্রথম দিকে। তারপর ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকা বহু মানুষকে অনুরোধ করি দেহগুলিকে গাড়িতে করে হাসপাতালে পাঠানোর জন্য। কেউ এগিয়ে আসতে চায়নি। অনেক অনুরোধ করায় জনা তিনেক ব্যক্তি এগিয়ে আসেন। তারপর আমরাই মৃতপ্রায় নিথর দেহগুলিকে টেনে হিঁচড়ে রাস্তার টোটোতে তুলে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠাই। ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটি চোখের সামনে ঘটল। আগামীকাল মেয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় তারপর আমি বাড়ি ফিরে আসি। মেয়ে এখনও স্বাভাবিক হতে পারেনি।”