নিজস্ব সংবাদদাতা: ২দিনের লকডাউনের পর গনেশ পূজা, ভিড় যেন হামলে পড়েছিল মিষ্টি দোকানটায়। সকাল থেকে বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যার মুখে উবে গেল লাখ টাকার কাছাকাছি মিষ্টি। সারাদিন দোকানে থিক থিক করেছে ভিড় অথচ কেউ জানতেই পারেনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বসে আছেন দোকান মালিক সহ পুরো পরিবারটাই। প্রশ্ন উঠেছে দোকান মালিক আক্রান্ত হওয়ার পরেও কী করে খোলা থাকল ওই দোকান! ঘটনা খড়গপুর শহরের খরিদা এলাকায়, খরিদা বাজারের মধ্যেই অবস্থিত ওই মিষ্টি দোকান যেখানে শনিবার দিন ভরই মানুষের ভিড় উপচে পড়েছিল মিষ্টি কেনার জন্য।
শনিবারই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্টে দেখা যায় খড়গপুর শহরে রেল হাসপাতাল এবং খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের প্রদত্ত নমুনা থেকে খড়গপুর শহরে মোট ২৬জন নতুন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। এই ২৬জনের ১৬জন খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নমুনা দিয়েছিলেন যার মধ্যে শহরের দেবলপুর সুকান্তপল্লী এলাকার একটি পরিবারের ৩ মহিলা সমেত চারজন রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় এই পরিবারের কর্তা বছর চৌষট্টির বৃদ্ধ কয়েকদিন আগেই সংক্রমিত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন যিনি খরিদা বাজারে ওই মিষ্টি দোকানটি চালাতেন। এবং তাঁর থেকেই পুরো পরিবার সংক্রমিত হয়েছেন।স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠেছে ওই মালিক আক্রান্ত হওয়ার পরই দোকানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়নি কেন? এতদিনে ওই দোকান থেকেই তো অনেকেরই আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।
পরিবারের দাবি, দোকানটি মূলত ম্যানেজার ও কর্মচারীরাই চালায়। পরিবারের দুই ছেলের একজন গুজরাট ও অন্যজন কলকাতায় ব্যবসার লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত এবং পরিবারের কর্তা কালে ভদ্রে দোকানে যেতেন। কিন্তু কর্তা প্রতিদিন দোকান না গেলেও মালিকের কর্মচারীরা বা ম্যানেজার তো নিয়মিত দোকানে এবং ওই বাড়িতে আসতেন। না হলে দোকানের হিসাবপত্র বোঝা যাবে কী করে? তা’ছাড়া পরিবারের কর্তা যে আক্রান্ত হওয়ার আগে দোকানেই বসতেন এটা এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
সম্ভবত এই দোকানসূত্রেই তিনি আক্রান্ত হয়েছেন এবং তার থেকেই পরিবারের বাকিরা আক্রান্ত হয়েছেন। শনিবার পরিবারের চারজন আক্রান্ত হওয়ার পর পুলিশ কী করে সেটাই এখন দেখার। উল্লেখ্য শনিবার ২৬জন আক্রান্তদের বেশিরভাগই পরিবারের পূর্ব আক্রান্তের সূত্রেই আক্রান্ত হয়েছেন। ব্যতিক্রম রয়েছেন মালঞ্চ, ছোট আয়মা ও তালবাগিচার কয়েকজন বাসিন্দা যাদের সংক্রমন সূত্র অজানা। এদিন সোনামূখী ঝুলির একটি পরিবারে ৭৫ এবং ৭০বছরের দুই বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধা সহ পরিবারের এক ৩৮ বছরের গৃহবধূ আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিবারের রেলকর্মচারী ব্যক্তি আগেই আক্রান্ত হয়েছিলেন।
মোটামুটি শহরের সমস্ত এলাকাতেই এদিন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। তবে ইন্দা এলাকার ওয়ার্ড গুলিতে এদিন সংক্রমনের খবর ছিলনা। এই দিন শহরের মোট আক্রান্ত ৪০০জন ছুঁয়ে গেছে যার মধ্যে প্রায় ২৫০জন করোনা মুক্ত। ২১তারিখ অবধি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী রেলের আক্রান্ত বাদ দিয়ে শহরে আক্রান্ত বলা হয়েছে ২৬২ জন। ওই তারিখে মধ্যে রেল ও ইএফআর মিলিয়ে ২৭০জন বলা হয়েছে।