ওয়েব ডেস্ক: সাতসকালে খাস কলকাতায় খুন! ট্যাক্সির ডিকি খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ। ডিকি ভরতি কুমড়ো। কুমড়ো সরাতেই বেরিয়ে এল এক মহিলার মাথা। শুক্রবার সাতসকালে চৌবাগা বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি ট্যাক্সি আটকাতেই হাড় হিম করা সামনে এল। ট্যাক্সির ভিতর থেকে উদ্ধার করা হল মহিলার রক্তাক্ত দেহ। এই ঘটনায় প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ঠিক কি কারণে ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রতিদিনের মত শুক্রবার সকালেও কলকাতার চৌবাগা বাসস্ট্যান্ডের রুটিন তল্লাশি করছিলেন পুলিশ। সে সময় চালক-সহ তিনজন একটি ট্যাক্সিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় পুলিশ গাড়িটি আটকায়। পুলিশ দেখেই রীতিমতো চমকে ওঠেন ট্যাক্সিতে থাকা যাত্রীরা। বিষয়টি পুলিশের নজরে পড়তেই সন্দেহের বসে চালককে ট্যাক্সির ডিকি খুলতে বলে পুলিশ। কিন্তু ডিকি খোলাতে আপত্তি করে ২ যাত্রী। তারা জানায়, ডিকিতে করে সবজি নিয়ে যাচ্ছে তারা। মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ঘাবরে গিয়েছেন তারা। এর এখানেই ওই পুলিশকর্মীর সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। তাই সন্দেহের বশেই জোর করে ডিকি খোলানো হয়। ডিকি খুলতেই বেশ কয়েকটি গোটা কুমড়ো দেখতে পায় পুলিশ। কুমড়োগুলি সরাতেই আচমকা কুমড়োর ফাঁক দিয়ে একটি মহিলার মাথাও দেখতে পাওয়া যায়। এরপরই প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ট্যাক্সিটি আটকিয়ে চালক-সহ ৩ যাত্রীকে আটক করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ওই মহিলার নাম সুজামণি গায়েন। ওই মহিলার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এর থেকেই তদন্তকারীদের অনুমান, ভারি কোনও বস্তু দিয়ে মহিলার মাথায় জোরে আঘাত করা হয়েছে। এরপর প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় সাত সকালেই বেরিয়েছিলেন অভিযুক্তরা। পুলিশের অনুমান, সম্ভবত বাসন্তী হাইওয়ের আশেপাশে কোনও পরিত্যক্ত এলাকায় দেহটি ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ওই ৩ অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গিয়েছে, নিহত ওই প্রৌঢ়া দিনের পর দিন তাঁর পুত্রবধূর উপর অত্যন্ত অত্যাচার করতেন। ইদানীং তা চূড়ান্ত রূপ নিয়েছিল। তার ফলে শাশুড়ির উপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল পুত্রবধূর। এমনকি মেয়ের উপর অত্যাচারের কারণে সুজামণি গায়েনের উপর ওই গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকেদের অত্যন্ত রাগ ছিল। ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, পারবারিক অশান্তির নিষ্পত্তি করতেই বুধবার ভাইয়ের সাহায্য নিয়ে মেয়ের শাশুড়িকে খুন করে পুত্রবধূর মা। তবে খুনের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তা ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।