Homeএখন খবরব্যাপক দুর্নীতি, নেতার আঙুল ফুলে কলা গাছ, পাত্তা দেননি দিলীপ, দুই পঞ্চায়েত...

ব্যাপক দুর্নীতি, নেতার আঙুল ফুলে কলা গাছ, পাত্তা দেননি দিলীপ, দুই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিজেপি ছাড়লেন, তৃণমূলের হাতেই আসতে চলেছে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতি

নিজস্ব সংবাদদাতা: অবশেষে জয় আসল তৃণমূলের, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একমাত্র পঞ্চায়েত সমিতি যা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে ছিল তার দখল নিতে চলেছে তৃনমূল, দীর্ঘ আড়াই বছর পরে। গত নির্বাচনে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ২৫ টি আসনের ১৩ টি পেয়েছিল বিজেপি,১২ টি আসন দখল করেছিল শাসকদল তৃণমূল। যদিও ওই ১২টি আসনের মধ্যেও কয়েকটি আসন তৃনমূল গায়ের জোরে দখল করেছে এমনই অভিযোগ ছিল বিজেপির। যদিও এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরও পঞ্চায়েত সমিতি গঠন করতে পারেনি কারন নানা অজুহাতে প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে এই বোর্ড গঠন করতে দেয়নি তৃনমূল এমনটাই অভিযোগ।

যদিও এলাকায় তৃনমূল বিরোধী জনরোষ এতটাই তীব্র ছিল যে সেই শুভেন্দু অধিকারীকে কেশিয়াড়ি উদ্ধার করার দায়িত্ব দিয়েও কাজ উদ্ধার করতে পারেননি তৃনমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী। শেষ অবধি বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া হাইকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছে। মাঝখানে ২ বার আদালত প্রশাসনকে বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিলেও আইন-শৃংখলার অজুহাতে সেই বোর্ড গঠন স্থগিত রাখা হয়। ফলে আড়াই বছর ধরে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির অচলাবস্থা চলতেই থাকে। আর পাশাপাশি তৃণমূলের তরফে চেষ্টা অব্যাহত থাকে নিজেদের পক্ষে সমর্থন যোগাড় করার।

সোমবার সেই কাজে অনেকটাই সফল হয়ে গেল তৃনমূল। এদিন মেদিনীপুর শহরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বিজেপির ২পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়ার সম্ভাবনা তৃণমূলের পক্ষে চলে যায়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি জানিয়েছেন ” হ্যাঁ পঞ্চায়েত সমিতির দুই সদস্য আমাদের বোর্ড গঠন করতে সহায়তা করবেন কারন তাঁরা আজ আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। যদিও বোর্ড গঠনের বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন রয়েছে। আদালতের রায় পেলে এবার তৃণমূল বোর্ড গঠন করবে।”

সোমবার মেদিনীপুরে বিজেপির জেতা দুই পঞ্চায়েত সদস্য শান্তি কিস্কু ও নবকুমার সিং তৃণমূলে যোগদান করেন।মেদিনীপুর শহরের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে তাদের হাতে পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অসিত মাইতি, সংসদ মানস ভুঁইয়া, মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র সহ অন্যান্যরা। পাশাপাশি বিজেপির কেশিয়াড়ি বিধানসভার সংযোজক অর্জুন দাস নিজেও তৃণমূলে যোগদান করেন। অর্জুন দাস বলেন-“বিজেপির নেতৃত্বে থাকা দিলীপ ঘোষ রা যেভাবে দল পরিচালনা করে তাতে মানুষের উন্নয়ন কখনোই হতে পারেনা। আমি আগে সিপিআইএম দলেছিলাম, বিজেপিতে যোগ দিয়ে যা বুঝলাম তা ক্ষতিকারক। তাই উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।”

বিজেপির জেলা সভাপতি সমিত দাস অভিযোগ করে বলেন-” আমাদের আসন বেশি ছিল বলে তৃণমূল গায়ের জোরে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বোর্ড গঠন করতে দেয়নি, হাইকোর্টে বিষয়টি বিচারাধীন। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের জেতা প্রার্থীদের প্রলোভন, পুলিশের ভয় দেখানো চলছিল। তাতেই প্ররোচিত হয়ে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছে। মানুষের মন থেকে বিজেপি কে সরাতে পারবে না ওরা।” এ বিষয়ে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া দুই প্রার্থী শান্তি কিস্কু ও নবকুমার সিং জানিয়েছেন,” উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে আছে কেশিয়াড়ির, উন্নয়নের স্বার্থে আমরা তৃণমূলে যোগ দিলাম।”

বিজেপির একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে অন্য কথা , দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বিজেপির কিছু নেতা যাঁর মধ্যে একজন প্রাক্তন মন্ডল সভাপতিও আছেন ব্যাপক দুর্নীতি ও তলাবাজি চালাচ্ছেন। অবৈধ বালি খাদান থেকে শুরু করে নানা প্রকারে অর্থ উপার্জন চলছে। বিষয়টি নিয়ে সরাসরি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে আলোচনাও করে তাঁরা কিন্তু ঘোষ ওই মন্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে কোনোও ব্যবস্থা নেননি। ফলে দলের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। বিজেপির এক নেতা জানান, “কেশিয়াড়ির মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করেছিলেন, তৃণমূলের দুর্নীতি আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে কিন্তু দুর্ভাগ্য আমরা বিকল্প হতে পারিনি। এখন তৃনমূল আর আমাদের মধ্যে কোনও ফারাক দেখতে পাচ্ছেনা মানুষ।”

RELATED ARTICLES

Most Popular