নিউজ ডেস্ক: ‘৪ নয়, শীতলকুচিতে ৮ জনকে গুলি করে মারা উচিৎ ছিল’ বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। চতুর্থ দফা ভোটে শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যুর ঘটনায় মন্তব্য করতে গিয়ে বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও ছাপিয়ে গেলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা।
রবিবার রাতে ভোটের প্রচার শেষে সাংবাদিকরা রাহুলকে শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করেন। তখনই চরম বিতর্কে উসকে তিনি বলেন, ‘ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছেলেকে, শুধু বিজেপি করার অপরাধে যারা গুলি করে মারে, তাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকে বোম ছুঁড়ে মানুষকে ভোট দিতে আটকাচ্ছে, তাঁদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিন শেষ হয়ে গেছে। এখন মস্তানরাজ কায়েম করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার চেষ্টা করছেন।’
তিনি সাংবাদিকদের আরও জানান, ‘ঝামেলা পাকাতে এলে কী হতে পারে, তা তো শীতলকুচিতে দেখেছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী উচিৎ জবাব দিয়েছে। আবার করলেও এই জবাব দেবে। শীতলকুচিতে ৪ জন নয়, ৮ জনকে গুলি করে মারা উচিৎ ছিল।”
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ পর্যায়ের ভোট চলাকালে কোচবিহারের শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন মাথাভাঙ্গা-১ ব্লকের জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫/১২৬ নম্বর মাদ্রাসা বুথে গুলি চলে। ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়৷ মৃতরা প্রত্যেকেই দলীয় কর্মী বলে দাবী তৃণমূলের। মৃতরা হামিদুল মিয়া, সামিউল হক, মনিরুল হক এবং আমজাদ হোসেন। ঘটনার পরেই ওই বুথে ভোট গ্রহণ পর্ব স্থগিত রাখা হয়। এই ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। শাসক শিবির এই ঘটনায় সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা দাবীও করেন। পাল্টা পদ্ম শিবির এই ঘটনার জন্য তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিমূলক মন্তব্যকে দায়ী করেছে।
এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষও অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। আর শুশু কটাক্ষ নয়, একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়েই দিলীপ বলেন, ‘শীতলকুচিতে দুষ্টু ছেলেরা গুলি খেয়েছে। এই দুষ্টু ছেলেরা থাকবে না বাংলায়। কেউ আইন হাতে নিলে এটা সারা বাংলায় হবে। ১৭ তারিখও কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথে থাকবে। কেউ বাড়াবাড়ি করলে, জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।’
পাশাপাশি বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুও এই ঘটনা ঘিরে নিজের মূল্যবান মতামত দিতে পিছপা হননি। রবিবারে দলীয় প্রার্থী বিষ্ণুপদ রায়ের সমর্থনে ধূপগুড়িতে রোড শো করেন সায়ন্তন। এরপরই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ”আমি সায়ন্তন বসু বলে যাচ্ছি। বেশি খেলা খেলতে যেও না, শীতলকুচির খেলা খেলে দেব।” থেমে না থেকেই তিনি আরও বলেন, “সকাল বেলা প্রথমবার ভোট দিতে যাওয়া আনন্দ বর্মনকে মেরে দিল। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি, ৪ ঘণ্টার মধ্যেই চারটেকে রাস্তা দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে।” তারপরেই ফিল্মি কায়দায় বলেন, ‘এক মারোগে তো চার মারেঙ্গে, শীতলকুচিতেও তাই হয়েছে।’ আর সায়ন্তনের এই বক্তব্য সামনে আসতেই দেখা দিয়েছে তীব্র বিতর্ক।