ওয়েব ডেস্ক : ২০২০ যেন ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের স্বাক্ষী রেখে যাচ্ছে একের পর এক। সারা বিশ্বের মতই এদেশেও করোনার ভয়াবহ থাবার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আমফানের জেরে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে গোটা পশ্চিমবঙ্গ। এরপর চলতি মাসের প্রথমে নিসর্গের তান্ডবে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির হয়৷ এর কয়েকদিনের যেতে না যেতেই বৃহস্পতিবার বিহার ও উত্তর প্রদেশে একই দিনে প্রবল বজ্রপাতে মৃত্যু হল হয়েছে ১০৭জনের যার মধ্যে শুধু বিহারেই মারা গেছে ৮৩ জন। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন প্রায় ৩০ জন। মানুষের পাশাপাশি এদিন দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ২০টির বেশি গবাদি পশুও। সূত্র মোতাবেক দুই রাজ্যের মোট ৩১টি রাজ্যে এই ব্রজপাতের ঘটনা ঘটেছে যার মধ্যে বিহারেরই ২৩টি জেলা রয়েছে। জানা গিয়েছে, বাকি ৮ জেলা উত্তরপ্রদেশের।
বৃহস্পতিবার বিহারের সর্বোচ্চ মৃত্যুর খবর এসেছে গোপালগঞ্জ জেলা থেকেই, মৃত্যু হয়েছে ১৩জনের। পুলিশ জানিয়েছে বজ্রাঘাতে মৃত ব্যক্তিদের প্রায় সব্বাই কৃষিজীবী এবং বরৌলি, মানঝা, বিজয়পুর, উচকাগাঁও ও কাটেয়া এলাকার বাসিন্দা। খেতে কাজ করার সময় তাঁদের গায়ে বিদ্যুতের ঝলকানি লাগায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় তার। এর আগে বজ্রপাতের জেরে একই দিনে এত জনের মৃত্যুর খবর শোনা যায়নি৷
এ দিন এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শোকপ্রকাশ করে টুইটারে টুইট করে লেখেন, “বিহার ও উত্তর প্রদেশের কিছু জেলায় প্রবল বর্ষণ ও বজ্রাঘাতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে দ্রুত ত্রাণকাজ চালু করা হয়েছে। দুর্যোগে নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার গভূর সমবেদনা জানাই।” ঘটনায় দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের প্রধান সচিব প্রত্যয় অমৃত জানিয়েছেন, “গোপালগঞ্জে ১৩ জন মারা গিয়েছেন, মধুবনিতে ৮ জন এবং সিওয়ান ও ভাগলপুরে ৬ জন করে, পূর্ব চম্পারণ, দ্বারভাঙা ও বাঁকাতে ৫ জন করে, খাগাড়িয়া ও ঔরঙ্গাবাদে ৩ জন করে, পশ্চিম চম্পারণ, কিষাণগঞ্জ, জেহানাবাদ, জামুই, পূর্ণিয়া, সুপাউল, বক্সার ও কাইমুরে দুই জন করে বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া একজন করে মারা গিয়েছেন সমস্তিপুর, শেওহর, সারন, সীতামাঢ়ি ও মাধেপুরায়।”
অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের সর্বাধিক ৯জনের মৃত্যুর খবর এসেছে দেওরিয়া জেলা থেকে। প্রয়াগরাজ বা এলাহাবাদে মারা গেছেন ৬ জন, ৩জন আম্বেদকার নগর ও ২জন মারা গেছেন বারবাঁকি জেলায়। উত্তরপ্রদেশে ২৪ জন আহত হয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘন্টায় আরও বজ্রপাতের সম্ভবনা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে আবহওয়া দপ্তর।
ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বলেছেন, আগামী ৪৮ঘন্টায় যেন আরও সতর্ক থাকেন মানুষজন। ইতিমধ্যেই দুই রাজ্যের তরফে নিহতদের পরিবার পিছু ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে সতর্কতামূলক বেশকিছু শর্তাবলী রয়েছে, সেগুলি রাজ্যবাসীকে মেনে চলার জন্য আবেদন জানিয়েছেন দুই মুখ্যমন্ত্রী।