নিজস্ব সংবাদদাতা: ওড়িশায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে ফের রাজ্যের করোনা ধরা পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরের একজনের। জেলার বেলদা থানার একটি গ্রামের ৭০বছরের ওই বৃদ্ধকে কোভিড-১৯ পজিটিভ বলেই জানিয়ে দিয়েছে ওড়িশা সরকার। ওড়িশা সরকারের করোনা সংক্রান্ত নিজস্ব পোর্টালে জানানো হয়েছে ৭০ বছরের ওই বৃদ্ধ গত ৭তারিখ পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি স্থানীয় হাসপাতাল থেকে অসুস্থ অবস্থায় একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স করে ওড়িশার অ্যাপোলো হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আসার পথে রাতেই বালেশ্বরের একটি চা দোকানে চা খায় তাঁরা। এরপরই ৮ তারিখ সকালে অর্থাৎ বুধবার তাঁরা পৌঁছান অ্যাপোলো হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে সাথে সাথে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে নেয়। বৃহস্পতিবার তাঁর লালারস পরীক্ষা হয় এবং পজিটিভ রেজাল্ট আসে। এরপরই তাঁকে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ ইনস্টিটিউ অফ মেডিক্যাল সায়েন্স কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ওড়িশা স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাবে ৪৪নম্বর এই রুগীর যাত্রাপথের বিবরন ধরেই সরকার বালেশ্বরের সেই চা দোকানের মালিক কর্মচারীদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে গিয়েছে। যদিও এই মুহূর্তে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে এরকম কোনও কনফার্মেশন নেই বলেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যদিও নিশ্চিত হওয়ার আগেই সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসাবে তৎপর হয়ে ওঠে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা পুলিশ। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ ছুটে যায় বেলদা থানা থেকে ১২কিলোমিটার দুরে ওই গ্রামে। ওই বৃদ্ধের পরিবারের সমস্ত সদস্য সদস্যা মায় তার জামাই এর পরিবার,তার বাড়ির পরিচারিকা এবং তার পরিবার, বৃদ্ধের প্রাথমিক চিকিৎসা করেছিলেন যে হাতুড়ে ডাক্তার আর যে অ্যাম্বুলেন্সে বৃদ্ধ ভুবনেশ্বর গিয়েছেন ওই চালককে নিয়ে আসা হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে সেন্টারে।বিকেল থেকে তৎপরতায় বেলদা পুলিশ বিএমওএইচ ও স্বাস্থ্য কর্মীরা এলাকায় রয়েছে।কার সাথে মেলামেশা করেছেন ওই ব্যক্তি খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশ চন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের কাছে নিশ্চিত করে এরকম কোনও খবর নেই। আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। সম্ভাব্য ধরে নিয়েই যাবতীয় সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
যদি ওড়িশা সরকারের দাবি সত্যি হয় তাহলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪ জন । ইতিপূর্বে দাসপুর থানা এলাকায় মুম্বাই ফেরৎ এক স্বর্ন কারিগর যুবক জ্বর নিয়ে বাড়ি ফিরে করোনা আক্রান্ত হন। পরে তাঁর বাবা ও স্ত্রীও কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়েন। ওড়িশা সরকারের আওতায় কোভিড-১৯ পজিটিভ এই বৃদ্ধ কিছুদিন আগেই বেশ কিছু উপসর্গ নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিভাবে তাঁর এই সংক্রমন হল তা খোঁজ করা হচ্ছে। বৃদ্ধের এক নাতি বাইরে থেকে এসেছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে এলাকাটি রাজ্যসরকারের চিহ্নিত সম্ভাব্য হটস্পট পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার গা ঘেঁষেই। ইতিমধ্যেই এগরাকে ঘিরে কঠিন নিরপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে পুলিশ। এই এগরার এক চিকিৎসক পরিবারের বিয়ে উপলক্ষ্যে ভোজ বাড়ির অনুষ্ঠান থেকেই কলকাতার ২জন সহ ৪জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সেই বিয়ে বাড়ির সঙ্গে বেলদার এই বৃদ্ধের কোনও ভাবে করোনা যোগ কিনা ভাবাচ্ছে সবাইকে।
হটস্পট এগরার গা ঘেঁষেই পশ্চিম মেদিনীপুরের বৃদ্ধ ওড়িশায় কোভিড-১৯ পজিটিভ, খবর নেই জানালো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর
RELATED ARTICLES