অশ্লেষা চৌধুরী: করোনা কালে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এ ল্যাপটপের ব্যবহারও যেন বেড়ে গিয়েছে। এছাড়াও ব্যক্তিগত কাজে বা বিনোদনের জন্য ল্যাপটপের ব্যবহার আমরা করে থাকি। আর দীর্ঘসময় ব্যবহারের কারণে ল্যাপটপে ধুলো-ময়লাও জমে যায়। আর অপরিষ্কার থাকলে এর কর্মক্ষমতা কমে যায়, কাজ করার সময় হ্যাং হয়ে যায়, রিস্টার্ট নেয় এবং হঠাৎ বন্ধও হয়ে যেতে পারে। তাই ল্যাপটপ শুধু ব্যবহার করলেই হবে না, এটা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাটাও আমাদেরই দায়িত্ব। আবার যেমন তেমন করে পরিষ্কার করলেও কিন্তু হবে না, জানতে হবে ল্যাপটপ পরিষ্কারের সঠিক নিয়ম,।
তাহলে আজকের প্রতিবেদনে জেনে নিন, ল্যাপটপ সঠিক উপায়ে পরিষ্কার করার কিছু নিয়ম
সবার প্রথম যা মনে রাখা একান্তই জরুরি, টা হল, ল্যাপটপ চার্জে রেখে কখনই পরিষ্কার করতে যাবেন না।
ময়লা-ধুলোবালি আপনার ল্যাপটপের প্রধান শত্রু। এজন্য কি-বোর্ডের কোণায় কোণায় জমে থাকা ময়লা সরাতে নরম একটি টুথব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আপনি রং করার নরম ব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন, এটি বেশ ভালো কাজ করে।
ল্যাপটপের স্ক্রিন মোছার সময় সবসময় সুতির কাপড় ব্যবহার করুণ।
এছাড়া বাজারে ল্যাপটপের উপযোগী স্ক্রিন প্রোটেক্টর, কিবোর্ড প্রোটেক্টর ও মিনি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার কিনতে পাওয়া যায়। ধুলোবালি পরিষ্কার করতে কম্প্রেসড এয়ারও ব্যবহার করতে পারেন আপনি।
ল্যাপটের মনিটর মোছার জন্য অ্যালকোহল ও অ্যামোনিয়া যুক্ত ক্লিনার ব্যবহার করা উচিৎ নয়, এতে মনিটর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অনেকেই ফেসিয়াল টিস্যু দিয়ে মনিটর পরিষ্কার করেন; সেটিও ঠিক নয়। ল্যাপটপ পরিষ্কারের জন্য আপনি জলে সামান্য ভিনেগার মিশিয়ে নিতে পারেন।
বাজারে নানা রকমের ক্লিনার স্প্রে পাওয়া যায়। তবে সেগুলো কখনোই ল্যাপটপ বা টিভির মনিটর পরিষ্কারে ব্যবহার করা ঠিক নয়। আর ল্যাপটপের ভেতরের অংশে পরিষ্কার করতে হলে অবশ্যই এর ম্যানুয়াল ভালো করে পড়ে নেওয়া উচিৎ।
মনে রাখবেন, ল্যাপটপ যেহেতু অনেক বেশি তাপ উৎপন্ন করে তাই একে ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করতে হবে। এজন্য বাজারে নানা ধরনের কুলার পাওয়া যায়, আপনি অনলাইনেও এসব কিনে নিতে পারেন। তাছাড়া সূর্যের আলো, হিটার এবং রান্নাঘর থেকে ল্যাপটপ দূরে রাখুন।
এছাড়াও ল্যাপটপের যত্নে যা করতে পারেন-
ল্যাপটপ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার সময় ডিসপ্লে ধরে তুলবেন না। ল্যাপটপের নীচের অংশ ধরে সরান। কারণ ল্যাপটপের নীচের অংশের ভার বেশি থাকে। তাই সবসময় ডিসপ্লে ধরে সরালে ল্যাপটপের জয়েন্ট আলগা হয়ে যেতে পারে। ল্যাপটপের উপর মোটা বই বা ভারী কিছু রাখবেন না। এতে ডিসপ্লে বা কিবোর্ডের ক্ষতি হতে পারে।
ল্যাপটপে কাজ করার সময় চা, কফি বা ঠাণ্ডা পানীয় থাকলে সাবধান থাকুন। ল্যাপটপে অনেক ছোট ছোট যন্ত্রাংশ থাকে। অসাবধানে তরল পদার্থ ল্যাপটপে পড়ে গেলে এই পার্টসগুলোর ক্ষতি হতে পারে। শর্ট সার্কিট হওয়াও অসম্ভব নয়।
ল্যাপটপ নিয়ে ট্র্যাভেল করার সময় ল্যাপটপ কভার এবং উপযুক্ত ল্যাপটপ ব্যাগ ব্যবহার করুন। এতে ধুলো, ময়লা, স্ত্র্যাচ বা হঠাৎ আঘাত লাগা থেকে ল্যাপটপ নিরাপদ থাকবে।
ল্যাপটপে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। নানা ধরনের ওয়েব পেজ খোলা, পেনড্রাইভে ফাইল ট্রান্সফার করা ইত্যাদি নানা কারণে ল্যাপটপ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। ভাইরাস গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করা, সফটওয়্যারের ক্ষতি কর সহ নানা বিপদ ডেকে আনতে পারে। অনলাইনে ফ্রি অ্যান্টিভাইরাসও পাওয়া যায়। তবে সেগুলো ইনস্টল করার আগে ভালো করে সেই সম্পর্কে জেনে নিন। অনেকসময় এই ধরনের অ্যান্টিভাইরাসেও আপনার ল্যাপটপের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
ল্যাপটপে সারাতে দেওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোর ব্যাকআপ অবশ্যই নিয়ে রাখবেন।
বছরে একবার কোনও নির্ভরযোগ্য সার্ভিস সেন্টার থেকে ল্যাপটপ সার্ভিসিং করিয়ে নিন। এতে ল্যাপটপ অনেকদিন ভালো থাকবে।
আপনার জিনিসের যত্ন আপনার হাতেই। আপনি একে যতটা আপন করে রাখবেন, এট আপনাকে ভালো সার্ভিস দিয়ে যাবে।