ওয়েব ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যের তরফে ইতিমধ্যেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা বাতিল করেই পরবর্তী সেমিস্টারে পৌঁছে যাওয়ার কথা ঘোষনা করা হয়েছিল। শুধুমাত্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিই নয় একই সাথে করোনা পরিস্থিতিতে আইআইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতো কলেজগুলিতেও কর্তৃপক্ষের তরফে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমতি মেলার পরেই মানবসম্পদ ও বিকাশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, যেভাবেই হোক সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা নিতেই হবে। যদিও এর আগে জুলাইয়ের মধ্যে পরীক্ষা প্রক্রিয়া মেটানোর কথা জানিয়েছিল বিকাশ মন্ত্রক। কিন্তু দেশে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ায় এই প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে ইউজিসি-র সংশোধিত গাইডলাইনস অনুসারে যেহেতু দেশে সংক্রমণের মাত্রা এইমূহুর্তে সক্রিয় সেক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরে যারা কোনও কারণে পরীক্ষা দিতে পারবে না তাদের ক্ষেত্রে মন্ত্রকের তরফে পরে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে৷ পাশাপাশি সমস্ত পরীক্ষাব্যবস্থাই স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া এসওপি মেনে সংগঠিত হবে বলেই জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কুহাড কমিটির সুপারিশ মেনে অফলাইন, অনলাইন কিংবা মিশ্র প্রক্রিয়ায় এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। সাধারণত পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য ও তাদের কেরিয়ার, এই দুটি বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এই দুটির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত পরীক্ষার পর অনেক পড়ুয়াই বিদেশে পড়াশোনা করতে যান। ফলে যদি পরীক্ষা না নিয়ে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে কিংবা চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় পড়ুয়াদের পাশ করিয়ে দেওয়া হয় তবে সারা বিশ্বে সে অর্থে স্বীকৃতি মিলবে না। ফলে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি মেলার জন্য পরীক্ষা নেওয়াটি জরুরি ছিল বলেই জানিয়েছে ইউজিসি।
এদিকে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির তরফে অনলাইনের মাধ্যমে ফাইনাল সেমিস্টার নেওয়ার কথা বলা হলেও পড়ুয়ারা প্রতিবাদ শুরু করে। সেই সময় তাদের দাবি ছিল, অনেকের পক্ষেই উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়৷ সেই সাথে ইন্টারনেটও একটি বড়ো সমস্যা৷ তবে ইউজিসি-র এই নির্দেশিকায় যেহেতু সময়সীমা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে পড়ুয়ারা মূল্যায়নের সময় পাবেন। সেই সাথে পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও নিজেদের পরিকাঠামো উন্নত করে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ শে জুলাই লকডাউন ঘোষণার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এই মূহুর্তে দেশে আনলক ২ পর্যায় চললেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় ৩১ শে জুলাই পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সেসময় ইউজিসি-র তরফে জানানো হয়েছিল, কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে পড়ুয়াদের আগের সেমিস্টারে নম্বর ও অনলাইন পরীক্ষার মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা করতে পারে। কিন্তু সেসময় অনলাইন পরীক্ষার সমস্যা নিয়ে পড়ুয়ারা পরীক্ষা শুরু করে। এরপর পশ্চিমবঙ্গ সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের তরফে ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা বাতিল করে মন্ত্রকের পূর্ব নির্দেশিকা অনুসারে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। কিন্তু যেহেতু ফাইনাল সেমিস্টার ফলে চূড়ান্ত বছরের পরীক্ষা নেওয়া আবশ্যিক বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে যারা ব্যাক বা সাপ্লিমেন্টয়ে ছিলেন তাঁদেরও পরীক্ষা দিতে হবেনা বলে জানানো হয়েছিল, বলা হয়েছিল আগের পরীক্ষাগুলির মধ্যে যে বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সেই নম্বরের ভিত্তিতেই পাশ করিয়ে দেওয়া হবে। কিন্ত ইউজিসির গাইড লাইনে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে পরীক্ষা দিয়েই পাশ করে আসতে হবে।