নিজস্ব সংবাদদাতা: রবিবারের রাত পোহালেই সোমবার অর্থাৎ আগামীকাল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে যশ অথবা ইয়াশ। আইএমডি (IMD) অথবা ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের বলছে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরে তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপটি ছুটে আসছে মধ্য উত্তর এবং উত্তর পশ্চিম তটভূমি লক্ষ্য করে। এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে সোমবার। অর্থাৎ যা কিনা একটি ছোট লোয়ারপ্রেসার বা নিম্নচাপ তা ডিপ্রেশন বা ঘনীভূত হয়ে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে আগামী ২৪ঘন্টার মধ্যে যদিও তখুনি তা মাটিতে আছড়ে পড়ছেনা। এই ঘূর্ণিঝড়ের মাটিতে ছুঁতে তখনও ৪৮ ঘন্টা দেরি থাকবে। কিন্তু সোমবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে সন্নিহিত এলাকায়।
পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরের এই মধ্য উত্তর এবং উত্তর পশ্চিম তটভূমি হল দিঘা থেকে শুরু করে উড়িষ্যা উপকূলের পূর্বদিক। সোজা কথায় দিঘা, তালসারি ইত্যাদি এলাকায় মাটি ছোঁবার পর যা মূলতঃ গাঙ্গেয় উপকূল বরাবর ছুটতে শুরু করবে। স্বাভাবিক ভাবেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রাথমিক অভিঘাত সামলাতে হবে পূর্ব ও পশ্চিমমেদিনীপুরকে।যা ক্রমান্বয়ে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও নদীয়াকে ছুঁয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আবহাওয়া বিদরা মনে করছেন বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান বাদ দিয়ে বাংলার দক্ষিণের প্রায় জেলাতে যশের খুব একটা প্রভাব পড়বেনা।
তবে আশার কথা একটাই হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও সুপার সাইক্লোনে রূপান্তরিত হবে এমন লক্ষণ দেখা দিচ্ছেনা আপাতত। সেদিক দিয়ে দেখলে আবহাওয়া বিদদের ধারণা সত্যি প্রমাণিত হলেহলেও আমফানের থেকে তুলনামূলক কম শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড় যশ। সর্বোচ্চ ৭০ মিটার প্রতি ঘন্টায় থাকবে ঝড়ের গতিবেগ। তা সত্ত্বেও বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে কোনরকম খামতি রাখছে না রাজ্য সরকার। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিভিন্ন বিপর্যয় মোকাবিলার বিভাগ।
যদিও, ঝড়ের গতি তীব্রতর না হলেও সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সম্ভবনা আছে আর ভারী বৃষ্টি জনিত ক্ষয়ক্ষতির সম্ভবনা প্রবল। অন্যদিকে উপকূলীয় বাঁধগুলি ভেঙে বিস্তীর্ন অংশ প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেসব দিক মাথায় রেখেই সমুদ্রের মৎস্যজীবীদের ২৩ শে মে’র মধ্যেই ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সেইসঙ্গে ২৪ শে মে সমুদ্র যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। উপকূল এলাকাবাসীর জন্য মাইকিংও করা হচ্ছে।
পাশাপাশি আগে থাকতেই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য নানারকম পদক্ষেপ নিতে শুরু করে দিয়েছে। তৈরি রাখা হচ্ছে সাইক্লোন সেন্টারগুলিকে। গবাদিপশুগুলি রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় পানীয়জল, শুকনো খাবার মজুত করা হচ্ছে। এদিকে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, সমস্ত পর্যবেক্ষন ও সম্ভাবনার বাইরেও থেকে যায় প্রকৃতির নিজস্ব খেয়াল যা সমস্ত হিসাব তছনছ করে দিতে পারে। সেদিকে নজর রেখেই প্রস্তুত থাকতে হবে প্রশাসনকে।