নিজস্ব সংবাদদাতা: ভাল আছেন পাথরা পুরাতত্ব ও মন্দির সংরক্ষণ কমিটির প্রাণ পুরুষ ইয়াসিন পাঠান। তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর পুত্র তদবির পাঠান। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ হঠাৎই স্ট্রোকে আক্রান্ত হন কবির পুরষ্কার প্রাপ্ত ইয়াসিন। সাথে সাথেই তাঁকে তাঁর হাতিহলকার বাস ভবন থেকে পরিবারের লোকেরা নিয়ে আসেন মেদিনীপুর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে নিয়ে যাওয়া কলকাতা মেডিকেল কলেজে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা চলছে তাঁর।
অভিজ্ঞ একদল চিকিৎসক মন্ডলীর তত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছেন। দ্য খড়গপুর পোষ্ট কে তসবির জানিয়েছেন, ” আজ (মঙ্গলবার) সকালে বাবা সামান্য কথা বলেছেন আমাদের সাথে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন প্রাথমিক সঙ্কট কেটে গেছে তবে পরিপূর্ণ সেরে উঠতে সময় লাগবে বেশ কিছুটা। আমরা আপাতত চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষনেই রাখছি।”
এদিকে ইয়াসিনের অসুস্থ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই উদ্বেগে তাঁর অগনিত গুণমুগ্ধ মানুষ। দীর্ঘ প্রায় ৫ দশক ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত পাথরা গ্রামের ক্ষয়িষ্ণু ৩৪টি হিন্দু দেবালয় রক্ষার লড়াই শুরু করেন ইয়াসিন যখন তাঁর ১৭ বছর বয়স। ১৯৭১ থেকে ১৯৯৫ দীর্ঘ লড়াই শেষ অবধি সফলতার মুখ দেখতে শুরু করে ততদিনে ৬টি দেবালয় ধ্বংস হয়ে যায়। ২০০৩ সালে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ সংস্থা ASI মন্দির গুলির দায়িত্ব নেয় এবং সংরক্ষনের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে সেই কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার পথে।
তাঁর এই অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ভারত সরকারের কবীর পুরষ্কারে সম্মানিত হন। যদিও এই সংরক্ষনের কাজের জন্য যে ২৫ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে সরকার সেই জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজটি আজও অসম্পূর্ণ বলে দাবি করে দ্বিতীয় দফার লড়াই শুরু করেছিলেন স্থানীয় চুয়াডাঙ্গা স্কুলের অবসর প্রাপ্ত এই করনিক।
নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ভগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারি এই মানুষটির অদম্য লড়াই তাঁকে সারা দেশে পরিচিতি এনে দিয়েছে সাম্প্রদায়িক সংহতির অনন্য নজির হিসাবে আর সেকারনেই তাঁর এই হঠাৎ অসুস্থতায় তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল তাঁর প্রিয়জন থেকে বিশিষ্ট জনেদের মধ্যে। পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এই সুস্থতার বার্তা অবশেষে স্বস্তি এনে দিয়েছে তাঁর পরিজনদের।