ওয়েব ডেস্ক: লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এর জেরে প্রায় প্রতিদিনই আত্মহত্যার ঘটনা নজরে আসছে৷ করোনা সংক্রমণের চেয়েও অনাহারে আত্মহত্যার প্রবনতা দ্রুত হারে বাড়ছে। লকডাউনের জেরে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেশ কিছুদিন যাবত অভাবে দিন কাটছিল, শেষ পর্যন্ত বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল কলকাতার রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার বৃদ্ধা মা ও দুই ছেলে৷ স্থানীয়দের চেষ্টায় তাদের উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ বর্তমানে মা ও দুই ছেলে সহ তিন জনেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
জানা গিয়েছে, রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার সোনালি পার্ক আবাসনে দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন বছর ৬৭-র ওই বৃদ্ধা। লকডাউনের জেরে কাজ চলে যায় বৃদ্ধার। বড় ছেলে আদালতের সেরেস্তায় কর্মরত ছিলেন। কিন্তু লকডাউনে দীর্ঘদিন আদালত বন্ধ থাকায় সেদিকেও আশা নেই। ছোটো ছেলে বিশেষ ভাবে সক্ষম। ফলে তার অসুধের জন্য মাসে বেশ কিছু টাকা খরচ করতে হয়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ছেলের ওষুষ দুরে থাক ঠিক মতো খাওয়াই জুটছিল না তাদের৷ তাদের অভাবের কথা প্রতিবেশীদের জানিয়েছিলেন বৃদ্ধা মহিলা৷ সে অনুযায়ী সাধ্যমত চেষ্টাও করেছিলেন তারা। কিন্তু এক পর্যায়ে তারাও মুখ ফেরান। এরপরই বেশ কয়েকদিন অভুক্ত থাকায় এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন মা ও দুই ছেলে।
জানা গিয়েছে, লকডাউনের আগে থেকেই তাদের পরিবার অভাবের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। মা ও বড় ছেলের যা রোজগার তাতে বিশেষভাবে সক্ষম ছোটো ছেলের ওষুধেই অর্ধেক চলে যায়। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের জেরে অভাব চরম রূপ নেয়। এরপর শুক্রবার সকালে দুই ছেলে-সহ বৃদ্ধা বিষ খেয়ে নিজেদের ঘরেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিলেন তাঁরা। এরপর বিষয়টি পড়শীদের নজরে আসতেই রিজেন্ট পার্ক থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তিন জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।