ওয়েব ডেস্ক : এমনিতেই সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়, তার উপর লকডাউনে চলে গিয়েছে কাজ। ফলে কিভাবে চলবে সংসার তা বুঝেই উঠতে পারছিল না নবদ্বীপের বছর ২৯ এর এক যুবক। ফলে বেশকিছুদিন যাবৎ মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি। একে সংসারের খরচ, তারওপর বাবা-মায়ের ওষুধ, কোথা থেকে জোগাড় হবে টাকা? সেই অবসাদের জেরে বিষ খেয়ে ‘আত্মঘাতী’ হলেন ওই যুবক। মৃত যুবক নদিয়ার নবদ্বীপের বাসিন্দা দীপঙ্কর মালাকার। এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েই কয়েকঘন্টার মধ্যেই আত্মহত্যা করেন তাঁর বাবাও। এলাকায় সুখী পরিবার হিসেবে পরিচিত মালাকার বাড়ির এমন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য গোটা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, ভীন রাজ্যে হোটেলে কাজ করতেন দীপঙ্কর। কিন্তু লকডাউনের ফলে কাজ চলে যায়। এরপরই বাড়ি ফিরে আসেন দীপঙ্কর। কিন্তু বাড়িতে আসার পরই শুরু হয় সংসারে টানাটানি। ভীন রাজ্যে কাজ করে দীপঙ্কর যা টাকা পাঠাতেন তা দিয়ে ভালোভাবেই চলে যেত সংসার। কিন্তু লকডাউনে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসার খরচ, বাবা-মায়ের চিকিৎসার খরচ কীভাবে জোগাড় হবে তা বুঝতে পারছিলেন না তিনি। জানা গিয়েছে,এই পরিস্থিতিতে গত তিন দিন আগে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন দীপঙ্কর। এরপর পরিবারের লোকেদের সহায়তায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দু’দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে শনিবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই যুবক।
এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শনিবার রাত থেকেই শোকে পাথর হয়ে যান তাঁর বাবা। এমনকি ছেলের মৃত্যুতে কান্নাকাটিও করেননি তিনি। এই ঘটনার কয়েক ঘন্টা পার হতে না হতেই আত্মহত্যা করেন বাবাও৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে ঘর থেকে বৃদ্ধের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। এরপর মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে বড় করেছিলেন ওই বৃদ্ধ। অর্থাভাব থাকলেও সুখী ছিলেন তাঁরা। কিন্তু ছেলের এই পরিণতি মানতে পারেননি ওর বাবা। সেই কারণেই এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই বৃদ্ধ।