নিজস্ব প্রতিনিধি: বোমা বিস্ফোরণে তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু, গুরুতর জখম আরও ২। তাঁকে মারার ছক কষতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা বলে দাবী সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া জিতেন্দ্র তিওয়ারির। অপরপক্ষে অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূলের। ঘটনাটি ঘটেছে, পশ্চিম বর্ধমান পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্ডাল থানার অন্তর্গত জামবাদ বেনেডি এলাকার। মৃত ব্যক্তির নাম শরবন চৌধুরী, বয়স ৪০।
জানা গিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে জামবাদ বেনেডি এলাকায় বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরণে জখম হন শরবন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি, আহত হন আরও ২ জন। রাতেই তাদের রানীগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় শরবনের। তবে শরবনের মৃত্যুর পর আহতরাও হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে বসে ওই ব্যক্তি বোমা বাঁধছিলেন। আকস্মিক বিস্ফোরণে জখম হন তারা ৩ জন। সহযোগীদের কোন পরিচয় বা খোঁজ পাওয়া যায়নি। আরও কয়েকজন জখম অথবা মারা যেতে পারে বলে সন্দেহ এলাকাবাসীদের। যে ঘরে বসে বোম বাঁধার কাজ হচ্ছিল বিস্ফোরণের সেই বাড়িটিরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। সদ্য তৃণমূল ত্যাগী তথা বর্তমানে পান্ডবেশ্বরের বিজেপি প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারি অভিযোগ করে জানান, “আমাকে মারার চক্রান্ত চলছে। বহুলা পঞ্চায়েতের প্রধান ও নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ বীর বাহাদুর সিং এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। আমরা পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছি।”
জিতেন্দ্রর এমন বিস্ফোরক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা তাঁকে এক হাত নিয়েছেন পান্ডবেশ্বের বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। আর পাণ্ডবেশ্বরের মানুষ জানে কার সঙ্গে দুষ্কৃতি, মাফিয়ারা আছে। ওকে একটু সংযত থাকতে পরামর্শ দেব।”তবে নির্বাচনের মুখে বোমা বিস্ফোরণে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্কের পরিবেশ।
উল্লেখ্য, গত সোমবারই বর্ধমান শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের রসিক পুর সুভাষ পল্লী মোড়ের কাছে বোমা বিস্ফোরণে ঘটনা ঘটে। বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে বিস্ফোরণ, ঘটনাস্থলেই মাথার অর্ধাংশ উড়ে গিয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়। গরুতর জখম হয় আরও এক শিশু। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে রসিকপুর যুব ওয়েলফেয়ার সোস্যাইটির সামনে পৌরসভার জলের কলের পাশে একটি উঁচু জায়গা থেকে শেখ আফরোজ মাটি নিচ্ছিল। সেই সময় মাটির নিচে বলের মত কোন বস্তু তার হাতে আসে। সেটিকে বল মনে করে মাটিতে ফেলতেই বিকট আওয়াজে এলাকা কেঁপে ওঠে। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে যায় আফরোজ। ছিটকে পড়ে সঙ্গে থাকা শেখ ইব্রাহিম। কারও কিছু বোঝার আগেই এই ঘটনা ঘটে যাওয়ায় গোটা এলাকা জুড়ে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।