নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার মধ্যে চলছে কালবৈশাখির দাপট। কোথাও ঘর ভেঙে চুরমার, কোথাও আবার নষ্ট হয়েছে হেক্টরের পর হেক্টর ফসল। দুর্যোগের এই জোড়া ফলার মধ্যে লাগতে চলেছে ত্রহ্যস্পর্শ। সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলেছে ঘূর্ণিঝড়। ‘উম্পুন’ নামে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে। চলতি মরশুমে প্রাক বর্ষা কোনও ঘূর্ণিঝড় এখনো তৈরি হয়নি। সেক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হলে এটিই হবে এই মরশুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড়। পূর্বাভাস অনুসারে ২৭ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে ইন্দিরা পয়েন্ট থেকে মালয়েশিয়ার বান্দা আচের মধ্যে তৈরি হবে একটি নিম্নচাপ। ১-২ তারিখের মধ্যে সেটি শক্তিবৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তার নাম হবে ‘উম্পুন’।
একাধিক আবহাওয়া সংস্থার পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড়টি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। সেজন্য বর্তমানে সমুদ্রে যাবতীয় রসদ মজুত রয়েছে। ফলে এটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।এপ্রিলের শেষের দিকে নিম্নচাপে ভর করে এই ঝড় সৃষ্টির ইঙ্গিত পেয়েছে আবহাওয়া দপ্তর আর তা জোরালো হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে সমুদ্র উপকূল সহ দক্ষিনবঙ্গেও। সেই নিম্চাপ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে নাম হবে উম্পুন। আর বুলবুলের চেয়ে সেটা কম কিছু হবেনা বলেই মনে করা হচ্ছে । যদিও আন্দামান ও নিকোবারের দ্বীপগুলিতে এই ঝড়ের প্রভাব বেশি পড়বে বলে মনে করছে আবহাওয়া দফতর। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মে’র প্রথমেই আন্দামান সাগর লাগোয়া দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে। তবে যেহেতু ঝড় তাই অভিমুখ বদলে যেতেও পারে ।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে প্রভাব পড়বে আন্দামান-নিকোবরের দ্বীপগুলোতে। এরপর ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ কী হবে, তা আরো কয়েকদিন পর জানা যাবে। এপ্রিলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের ভারতের মূল ভূখণ্ডের দিকে এগিয়ে আসার প্রবণতা কম।১৮৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত এপ্রিলে সৃষ্ট কোনো ঘূর্ণিঝড়ই পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানেনি। আর ভারতের পূর্ব উপকূলে হাজির হয়েছে মাত্র চারটি ঘূর্ণিঝড়। বাকি ২৪টির গন্তব্য হয়েছে বাংলাদেশ বা মিয়ানমার।হাওয়া অফিস জানিয়েছে, মে মাসের প্রথমেই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে।
তবে সেটির গতিপথ কোনদিকে হবে তা নিয়ে এখনও কিছু জানাতে পারেনি হাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান বলেন, ‘২৭ এপ্রিলের পর আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত উদয় হবে। সেটি শক্তি বাড়াতে পারে।’সবটাই সম্ভাবনার পর্যায়ে থাকলেও একটি বিষয় ইতোমধ্যেই নির্ধারিত। তা হল ঘূর্ণিঝড়ের নাম। নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিলেই নাম দেওয়া হবে ‘উম্পুন’। নামটি দিয়েছে থাইল্যান্ড। ঘূর্ণিঝড়ের বর্তমান তালিকার এটিই শেষ নাম। এরপর ফের প্রকাশ হবে ঘূর্ণিঝড়ের নামের নতুন তালিকা।