নিজস্ব সংবাদদাতা: মকর স্নানের ২৪ ঘন্টা আগেই ফিরে এল উত্তুরে হওয়া। বৃহস্পতিবার শীতে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতেই মকর স্নান করবে খড়গপুর, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম তথা সমগ্র জঙ্গলমহল। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে একলাফে পারদ নেমেছে ৪থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফিরে আসছে শীত ফলে জমজমাট খড়গপুর মেদিনীপুর ঝাড়গ্রামের মকর পরব অথবা অবাঙালিদের পোঙ্গল। বৃহস্পতিবার ভোর ভোর স্নান করে নতুন কাপড় পরে খেজুর গুড় আর পিঠে খাওয়া। জঙ্গলমহলের বাড়িতে বাড়িতে রাত থেকেই শুরু হয়ে গেছে পুর অথবা গুড় পিঠা। সঙ্গে সরুচাকলি, পাটি সাপটা কিংবা ঢাকা পিঠা, দুধে সেদ্ধ আরও কত কি!
৫ই জানুয়ারি থেকে হঠাৎই চড়তে থাকে পারদ। মেদিনীপুর খড়গপুর কিংবা ঝাড়গ্রামে নূন্যতম তাপমাত্রার পারদ ছিল ১০ ডিগ্রির কাঁটা ছুঁয়ে। ৬ই জানুয়ারি সেই পারদ সরাসরি ১২ডিগ্রির কাছাকাছি চলে যায়। ৭ই জানুয়ারি একলাফে পারদ চড়ে যায় ১৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে। ফলে হু হু করে বাড়তে থাকে গরম। তীব্র অস্বস্তি ছিল ১১ই জানুয়ারি। পারদ চড়ে যায় সাড়ে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। নুন্যতম তাপমাত্রার যখন এই হাল তখন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা একেবারে গ্রীষ্মকালের মতই। গত সাতদিনের হিসাবে ৭ই জানুয়ারি দেখা যায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে গিয়েছে সাড়ে ৩২ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। ফলে শুরু হয়ে যায় দারুন অস্বস্তি। অনেক ঘরেই ফ্যান অবধি চালাতে হয়েছে।
তবে মঙ্গলবার থেকেই হঠাৎ বদলে যায় আবহাওয়া। ওইদিন অর্থাৎ ১২ই জানুয়ারি হঠাৎই উত্তুরে বাতাস বইতে শুরু করে। একটু একটু করে শীত বোধ শুরু হয়। এরপর ১৮ থেকে ১৬র ঘরে নেমে আসে তাপমান। সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও আগের দিনের চেয়ে তিন ডিগ্রি কমে ৩০য়ের ঘরে। তবে রাতের মধ্যে আরও পারদ পতন বুধবার একলাফে ১৩ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে দেয় নুন্যতম তাপমান। সঙ্গে ঘন্টায় ৫ কিলোমিটার বেগে উত্তুরে হওয়া দুই শহরের সাথে ঝাড়গ্রাম এবং জঙ্গলমহলকে ফের ফিরিয়ে নিয়ে গেছে জানুয়ারির চেনা শীতের ছন্দে।
এই শীত কতদিন স্থায়ী হবে তা এখুনি বলা মুশকিল কিন্তু আবহাওয়াবিদরা বলছেন আগামী ৫দিন খুব বেশি কিছু হেরফের হবেনা। তবে উত্তরভারত জুড়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হানা দিতে চলেছে বলে খবর। এই শৈত্যপ্রবাহ আগামী
৩ দিন ধরে উত্তর ভারতে চলবে যার ফলে উত্তর ভারতে বেশিরভাগ জায়গার নুন্যতম তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি পর্যন্ত যেতে পারে। যে কারনে একটি হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে রাজস্থানে। সেই ঠান্ডার দাপট এবার বাড়তে চলেছে উত্তরপ্রদেশে থেকে দিল্লি পর্যন্ত। পাঞ্জাব ও হরিয়ানাতেও শীতের তীব্রতা থাকবে। যদি তারই কিছু প্রভাব বিহার ঝাড়খন্ড হয়ে বাংলা সীমান্তে আসে তবে আরও একটু জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়তে পারে বৈকি।
গত ৯দিন খড়গপুর ও মেদিনীপুরের পারদের উত্থান পতন দেখে নেওয়া যাক। সবই সেলসিয়াসে ধরতে হবে। ১২ই জানুয়ারি অবধি তাপমাত্রার রেকর্ড পাওয়া গেছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া উদ্যান থেকে। আজকের অর্থাৎ ১৩ই জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার তাপমান সংগ্ৰহ করা হয়েছে ক্যাম্পাস ওয়েদার সূত্রে। তারিখ সর্বনিম্ন সর্বোচ্চ ৫ই জানু’২১ ১০.৮২ ৩১.৩৮
৬ই জানু’২১ ১১.৯৬ ৩২.৪৭
৭ই জানু’২১ ১৫.১৯ ৩২.৫২
৮ই জানু’২১ ১৫.৪৪ ৩১.১২
৯ই জানু’২১ ১৫.৪৬ ৩০.৫৮
১০ই জানু’২১ ১৫.৮১ ৩১.৮৩
১১ই জানু’২১ ১৮.৫৬ ৩০.৮৫
১২ই জানু’২১ ১৬.২৭ ২৭.৯৪
১৩ই জানু’২১ ১৩.০০ ২৭.০০
গতবছর আজকের দিনে খড়গপুর মেদিনীপুরের নূন্যতম ও সর্বোচ্চ তাপমান ছিল ১১ ডিগ্রি ও ২৬ডিগ্রি সেলসিয়াস।