নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৫দিন আগে শেষবার বৃষ্টিতে ভিজেছিল কাঁসাই উপত্যকা। তারপর পক্ষকালের দাবদাহ। একে করোনা অতিমারির জ্বালা আর তার ওপর ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা! পুড়ে যাচ্ছিল খড়গপুর মেদিনীপুর ডেবরা পিংলা সবং। শুক্রবার সেই যন্ত্রণার খানিক অবসান ঘটালো সন্ধ্যে থেকে শুরু হওয়া খানিক ঝোড়ো হওয়া আর খানিক বৃষ্টি।
বুধবার প্রচন্ড দাবদাহ গেছে খড়গপুর মেদিনীপুরে। বৃহস্পতিবার সেই তাপমাত্রা সামান্য কমেছিল কিন্তু গরম থেকে রেহাই মেলেনি। শুক্রবার তাই মিলল অবশেষে। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথমে খানিকটা ঝোড়ো হওয়ার পর টিপটিপ করে বৃষ্টি নামে খানিকটা তারপর বন্ধ হয়ে যায়। মানুষের আফসোস হয় হয়েও বৃষ্টি হলনা বলে। কিন্তু সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ঝিমঝিম বৃষ্টি শুরু হয় যা একনাগাড়ে চলেছে কোথাও দেড়ঘন্টা আবার কোথাও দু’ঘন্টা। আর তাতেই প্রাণ জুড়িয়েছে অনেকটাই।
ঝড়ের আভাস আর বৃষ্টি কিছুটা হলেও আতঙ্কের কারন হয়েছিল ডেবরা পিংলা সবং আর গ্রামীন খড়গপুরে। বিশেষ করে যাঁদের মাঠে এখনো বোরো ধান রয়ে গেছে। না, শেষ পাওয়া খবর অবধি খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। আগামী দুদিন চড়া রোদ খেলে ধকল সামলে নেবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বরং বৃষ্টির ফলে নরম রোদে ধান কাটার খানিকটা সুবিধা হবেই বলে তাঁরা মনে করছেন।
এদিন প্রায় সমগ্র দক্ষিণবঙ্গেই হানা দিয়েছে এই কালবৈশাখি। যার জেরে সাময়িক স্বস্তি মিলেছে অসহ্য তাপপ্রবাহ থেকে। কেন এই মৃদু ঝড় বৃষ্টি তার ব্যাখ্যাও দিয়েছে হওয়া অফিস। বলেছে অক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তের জেরে এদিন বিকেল থেকে ছোটনাগপুরের মালভূমিতে তৈরি হতে শুরু করে বজ্রগর্ভ মেঘ। যা ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গের সীমানার দিকে এগিয়ে এসেছে। এর ফলে বৃহস্পতিবারই ঝ়ড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম বর্ধমানের একাংশে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই কালবৈশাখি আঘাত হানে বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে।
সেই বকেয়া ঝড়বৃষ্টিই শুক্রবার পাওনা মিটিয়ে দিয়ে গেল কাঁসাই উপত্যকাকে। এরই সাথে একটি সতর্কবার্তাও জানিয়ে রাখা ভালো যে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে আগামী ২ থেকে ৬ মে অবধি ঝড়বৃষ্টি সহ প্রবল বজ্রপাতের সম্ভবনা রয়েছে। এবং এটা হতে পারে গাঙ্গেয় উপকূল জুড়েই। এই সময় মাঠে যাঁরা কাজ করবেন তাঁদের সতর্ক থাকতে হবে। আকাশে ঘন কালো মেঘের অবস্থান থাকলেই খোলা মাঠ ছেড়ে নিকটবর্তী কোনোও ভালো জায়গায় আশ্রয় নিন। এই সময় বৃষ্টি হতে পারে ৭ থেকে ১১মিলিমিটার। আর হ্যাঁ, ২তারিখ থেকে কয়েকটা দিন তাপমাত্রা নামতে চলেছে স্বাভাবিকের চেয়ে খানিকটা নিচেই। ফলে শুক্রবার থেকে যে সুখনিদ্রার শুরু হল তা বহাল থাকতে পারে আরও কয়েকটা দিন।