নিউজ ডেস্ক: মাঘ মাসের শুরুতেই শীতের হাইভোল্টেজ ইনিংস শুরু। মকরস্নানের দিন থেকেই যে পারদ পতন ও সঙ্গে উত্তুরে হওয়া শুরু হয়েছিল এখনো অবধি তা অব্যাহত থাকায় হিমের আমেজ ফিরে এসে স্থায়ী হয়েছে খড়গপুর মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম সহ সমগ্র জঙ্গলমহলেই। প্রায় ভরা গ্রীষ্মের মুখ থেকে ফের ফিরে এল শীত। গত ১২ই জানুয়ারি মেদিনীপুর খড়গপুর এবং ঝাড়গ্রামের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.৯৪ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ১৬.২৭ সেলসিয়াস। দু’দিন অর্থাৎ ১৪ই জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ২ডিগ্রি নেমে ১৩.৩৬ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬.০১ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। পরের দিনই হুড়মুড়িয়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও নীচে নেমে ১১.৩৮ ডিগ্রিতে নেমে যায়। অন্যদিকে ওই দিনই অর্থাৎ ১৫ জানুয়ারি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে দাঁড়ায় ২৪.৯৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সবচেয়ে বড় কথা এই ক’দিনে দিনের গড় তাপমাত্রাও হু হু করে কমেছে। যা সাধারণ ভাবে ব্যতিক্রম। কারন শীত স্থায়ী হলে সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন কম বা বেশি হলেও গড় তাপমাত্রার খুব বেশি হেরফের হয়না। গত ১২ই জানুয়ারি এই অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা ছিল ২১.২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৪তারিখ যা নেমে ১৯.০১ এবং ১৫ই জানুয়ারি তা আরও নেমে ১৭.৬৭ দাঁড়ায়। একই ভাবে শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। সেই সাথে রয়েছে উত্তরে হাওয়ার দাপট। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন এই পরিস্থিতি বজায় থাকবে। অতএব শহরবাসী আর কিছুটা দিন জমিয়ে উপভোগ করতে পারবেন শীতের আমেজ।
কয়েকদিন থেকে পারদ কিছুটা চড়লেও ফের মঙ্গলবার ভোর থেকেই অনুভূত হয় শীতের আমেজ। আগামী কয়েকদিন ফের পারদ পতনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। পূর্বাভাস ছিল, মকর সংক্রান্তিতে রাজ্যে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়বে। গত ১০ বছরের জানুয়ারির সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নিরিখে, তৃতীয়স্থানে ২০২১। আলিপুর হাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজ্যে ঢুকছে উত্তুরে হাওয়া। আর হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস সত্যি করে রাজ্যে ফের ফিরছে শীত।
শুধু তাই নয়, দক্ষিণবঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাসও জারি করে হাওয়া অফিস। পৌষের শেষদিনে প্রায় ২ ডিগ্রি নামে পারদ। গতকাল কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। আগামী ৩ দিন এই পরিস্থিতি বজায় থাকবে বলেও জানিয়েছে হাওয়া অফিস। পাশাপাশি পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ – রাজ্যের এই ৫ জেলায় শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি বলেও জানায় হাওয়া অফিস। এদিকে উত্তরবঙ্গেও গতকাল কুয়াশার প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল যথেষ্টই। আর আজও সেই পরিস্থিতি বজায় রয়েছে।
অপরদিকে দেশের রাজধানীতেও জাঁকিয়ে পড়েছে শীত। কুয়াশার মোটা চাদরে ঢেকেছে রাজধানী দিল্লী। কুয়াশায় ঢেকে গিয়েছে দিল্লীর আশপাশের অঞ্চলও। কুয়াশার প্রভাব পড়েছে বিমান পরিষেবার উপরও। ঘন কুয়াশার জেরে রাজধানীতে বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেন। একধিক রুটের বিমান উড়ছে দেরিতে। বাতিল হয়েছে কোনও কোনও রুটের বিমান। জানা গিয়েছে, ৪ রুটের বিমান উড়বে দেরিতে। বাতিল হয়েছে ১টি বিমান।
দিল্লী বিমানবন্দরের তরফে বিমান পরিষেবা অ্যাডভাইজরি জারি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, প্রত্যেক বিমান যাত্রীকে সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তারা জানিয়েছে, শুধুমাত্র CA,T IIIA and CATIII B বিমান পরিষেবা চালু থাকবে। বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত আপডেট পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
দিল্লির পাশাপাশি কুয়াশা ঢেকেছে লক্ষ্ণৌ, অমৃতসরে। গতকাল দিল্লীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬ থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ভোর সাড়ে ৫টায় রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। সফদরগঞ্জে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ১.২ ডিগ্রি বাড়তে পারে তাপমাত্রা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দৃশ্যমানতা শূন্য। আগামীকালও কুয়াশাচ্ছন্ন থাকবে। সোমবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।