নিজস্ব সংবাদদাতা: অবশেষে যেন দয়া করলেন প্রকৃতি দীর্ঘ ১০ দিনের খরা কাটিয়ে জমকালো বৃষ্টি নামল খড়গপুর আর মেদিনীপুরে। না, বৃষ্টি হয়েছিল মঙ্গলবারও কিন্তু বুধবারের বৃষ্টির কাছে তা হার মেনেছে। এদিন সকালের দিকে মেঘলা আকাশ থাকলেও পুরোপুরি বৃষ্টি নয়, কখনও বৃষ্টি আবার কখনও ঝড়ো হওয়া ঠান্ডা করল দুই শহরকে। বুধবার বেলা গড়াতেই উত্তর পশ্চিমে জমাট বেঁধেছে ঘন কালো মেঘ আর বিকালের আকাশ আরও গাঢ় অন্ধকার করে বৃষ্টি ঝাঁপিয়েছে খড়গপুর মেদিনীপুরে।
বুধবার কখনো ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি আবার কখনো দমকা হওয়ার পেছনে সেই বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের সৌজন্য। বুধবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলায় সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। তবে নিম্নচাপটি ক্রমশ পশ্চিম দিকে সরে যাওয়ায় রাজ্যের পশ্চিমাংশের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে।
উত্তর বঙ্গোসাগরে নিম্নচাপের জেরে সক্রিয় হয়েছে মৌসুমি অক্ষরেখা। ফলে সোমবার রাত থেকে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বুধবারও সেই ধারাপাত চলছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সর্বত্রই বুধবার সারাদিন বৃষ্টি চলবে।
এদিন অবশ্য কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়ায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। তবে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই বর্ধমান, বীরভূমে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
নিম্নচাপের জেরে ঘণ্টায় ৪৫ কিমি বেগে বয়ে গেছে ঝোড়ো হাওয়া। যে কারনে একটা শিরশিরে ভাব অনুভূত হয়েছে সারা দিন। এই হওয়ার কথা মাথায় রেখেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, কোচবিহারে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি মালদা, দুই দিনাজপুরেও হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
গত জুলাইয়ে দক্ষিণবঙ্গে তেমন বৃষ্টি হয়নি।আবহবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপের সৌজন্য কিছুটা সক্রিয় হয়েছে বর্ষা। যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা সেই পরিমাণ বৃষ্টি এবছর দক্ষিণবঙ্গে হয়নি। ফলে স্বভাবতই বৃষ্টির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আগামি কয়েকদিনে দক্ষিণবঙ্গে যে পরিমাণ বৃষ্টি হবে তাতে বৃষ্টির ঘাটতি মিটবে। বর্ষার আমেজ পাওয়া যাবে। বর্ষা পেরুনোর মুখে, বিশেষ করে ভারি বৃষ্টির পালা প্রায় শেষ। এবার মাঝে মধ্যে নিম্নচাপ এসে খড়গপুর আর মেদিনীপুরকে ঠান্ডা করে দিয়ে যাক।