নাম ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ বুধবার |
নিজস্ব সংবাদদাতা: কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে ফেল করিয়ে দেওয়া বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিদ্যার অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র জানার বিরুদ্ধে ভয়ংকর প্রতিহিংসা পরায়নতার আভিযোগ আনল ওই বিভাগেরই ছাত্রছাত্রীরা। জানাল কিভাবে ফাঁদ পেতে ছাত্রীকে নিজের শয্যা সঙ্গিনী করে গড়ে তুলতে মরিয়া হয়ে উঠতেন তিনি।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
জানা গেছে প্রয়োজনের তুলনায় অধ্যাপক কম থাকায় দেড় থেকে দুটি পেপারের দায়িত্ব থাকত তাঁর ওপর আর পেপার গুলি ছিল সব চেয়ে কঠিন। এক ছাত্র জানান, কোয়ান্টাম মেকানিক, স্ট্রস্টিক্যল মেকানিক, ম্যাথমেটিক্যাল ফিজিক্স, পার্টিক্যাল ফিজিক্সের মত কঠিন বিষয় দেখতেন উনি। হাতে পেপার বেশি তাই নম্বরও বেশি ফলে এই সুযোগটিকে কাজে লাগাতেন অধ্যাপক জানা।
মিছিলে মিছিলে ছয়লাপ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় |
‘ওনার কাজ ছিল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা। এটা করতে প্রথম সেমিস্টার থেকেই একজন স্পাই তৈরি করা। বেশি নম্বর ও পাশ করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়ে আমাদেরই মধ্যে কাউকে একজন স্পাই হয়ে যেত। একটি সেমিস্টারের প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর ব্যক্তিগত তথ্য সরবরাহ করা, কোন ছাত্র বা ছাত্রী কোথায় কি করছে সব খবর পৌঁছে যেত তাঁর কাছে আর এই কারনেই আমরা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলতে ভয় পেতাম। আমাদের মধ্যে কোনও ঐক্য নেই ওই জন্য। ওনার বিরুদ্ধচারণ করলে বা ওনার কাউকে পছন্দ না হলে তার পাশ করা অসম্ভব ছিল। এরকমই অনেককে পাওয়া যাবে যাঁরা বছরের পর বছর সাপ্লি পেয়ে আসছে।” জানালেন এক ছাত্র।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
অধ্যাপক যে ছাত্রীকে টার্গেট করতেন তাকে ফেসবুক বা ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন জায়গায় কথা বলতে ডাকতেন আর সেই ডাকে সাড়া না দিলে তার কি পরিনতি হয় সেটা খড়গপুরের আভিযোগকারিণী ছাত্রীর দশা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
উত্তাল ক্যাম্পাস |
পদার্থ বিদ্যা বিভাগের এক ছাত্র জানাল, ‘আরও মারাত্মক এটা যে উনি যে ছাত্রীকে টার্গেট করলেন সেই ছাত্রীর আশে পাশে কোনও ছাত্র ঘোরাঘুরি করলে আর সেই ছাত্র যদি পদার্থবিদ্যার হয় তবে তার জীবন হারাম করে দেওয়া হত। আর এই কারনে আমরা কোনও ছাত্রীর সংগে কথা বলতেই ভয় পেতাম। কারন কে ওনার আকাঙ্খিত সেটা জানা মুশকিল ছিল।”
ছাত্ররা আরও জানিয়েছে, অধ্যাপকের প্রতিহিংসার বলি হয়ে অনেকেরই ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেছে। একেক জন ছাত্র পিঐইচডি করার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করা স্বত্তেও পিঐইচডি করতে পারেননি কারন উনি তাঁদের শেষ সেমিস্টারে নিজের পেপারে সাপ্লি দিয়ে বছরের পর বছর আটকে দিয়েছেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ এতটাই বেশি যে মঙ্গলবারের চেয়ে দ্বিগুণ বিক্ষোভ আছড়ে পড়েছে বুধবার। ‘ছাত্র ঐক্য’ নামের সংগঠন গড়ে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল আর বিক্ষোভ সমাবেশে হাজির হয়েছেন সমস্ত স্তরের ২হাজার ছাত্রছাত্রী। বেলা ২টার পর ক্লাশ হয়নি কোনও বিভাগেই। আগামীকাল এবং তারপরেও যতদিন না ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছে ছাত্র ঐক্য।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এদিকে অভিযুক্ত অধ্যাপককে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্যাম্পাসে ঢুকতে বারন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য অধ্যাপক রঞ্জন চক্রবর্ত্তী জানিয়েছেন, ” আমরা আভিযোগ পাওয়া মাত্রই অভ্যন্তরীণ আভিযোগ কমিটি বা আইসিসির কাছে পাঠিয়েছি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁরাই সর্বোচ্চ কমিটি। তাঁদের প্রভাবিত করা যায়না। আমি নিজেও তাঁদের অধিন। তদন্ত শুরু হয়েছে, অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা তারাই ঠিক করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষর এখানে কিছুই করার নেই। আমি ছাত্রছাত্রীদের বলব তাঁদের ওপর আস্থা রাখতে, বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক করে পঠন পাঠনে ফিরে আসতে।”
এখানে আপনিও বিজ্ঞাপন দিন |
যদিও ছাত্রছাত্রীদের আভিযোগ, ” এর আগেও ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে একটি আভিযোগ হয়েছিল কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। মাস চারেক আগে মাইক্রো বায়োলজির এক অধ্যাপক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেছিল বলে যে আভিযোগ উঠেছিল তাতে নামমাত্র সাসপেন্ড করা হয়েছে অধ্যাপককে। আমরা কঠিন শাস্তি চাইছি। ওই অধ্যাপকের পুরোপুরি বহিস্কার চাই যাতে আর কারও সর্বনাশ উনি করতে না পারেন।”