ওয়েব ডেস্ক : চলতি সপ্তাহেই গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। তারপর থেকে ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চিনাদ্রব্য বয়কটে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে৷ ভেঙে ফেলা হছে চিনা মোবাইল ফোন। ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগের তরফে কেন্দ্রকে টিকটক, উইচ্যাট, ভিগো, হ্যালো, শেয়ারইট, এক্সেন্ডার, জুমের মতো ৫২টি চিনা অ্যাপ বা চিনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অ্যাপ্লিকেশন ব্লক করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। নেটিজেনদের তরফে চিনের সঙ্গে সমস্ত আর্থিক লেনদেন বন্ধ করার দাবিও তোলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকটাই উদ্বেগের মধ্যে পড়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। প্রতিবছর আইপিএলের ‘টাইটেল স্পনসর’ ভিভো একটি চিনা মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারী সংস্থা। এতে ভিভো-র তরফে প্রায় ৪৪০ কোটি দেওয়া হয়। ফলে, ভারতে চিনা দ্রব্য বয়কট করা হলেও ক্রিকেট বোর্ডের তরফে এই মূহুর্তে চিনের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্ভব নয়, এমনটাই জানিয়েছেন বিসিসিআই কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে বিসিসিআই কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমল জানাম, ” যতদিন ভারতের বাজারে চিনের সামগ্রী বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে, ততদিন চিনা সংস্থার কাছ থেকে স্পনসরশিপ বাবদ অর্থ উপার্জনে বাধা থাকার কথা নয়। চিনা সংস্থার কাছ থেকে নেওয়া অর্থ যদি দেশের কাজে লাগে, তাহলে তাতে আপত্তি থাকা উচিত নয়। কারণ সেই অর্থ ভারতীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে, চিনের নয়। একটা চিনা সংস্থার হয়ে চিনের স্বার্থে প্রচার করা আর চিনা সংস্থার হয়ে ভারতের স্বার্থে প্রচার করার মধ্যে তফাৎ থাকে। সেই তফাৎটাই বোঝা উচিত সকলের। আমরা আইপিএলের টাইটেল স্পনসর হিসেবে চিনা সংস্থার প্রচারের জন্য তাদের কাছ থেকে যে অর্থ পাই, তার ৪২ শতাংশ সরকারের খাতায় জমা পড়ে ট্যাক্স হিসেবে। তাতে দেশের লাভ হয়। চিনা সংস্থা যদি এই টাকা আইপিএলকে না দিত, তাহলে সেটা তারা নিজেদের দেশে নিয়ে যেত নিশ্চিত। সুতরাং এখান থেকে যে টাকা তারা আয় করে, তার কিছু অংশ এখানেই রেখে দেওয়া দেশের পক্ষে লাভজনক।”
তিনি আরও বলেন, ” যদি আমরা স্টেডিয়াম গড়ার জন্য কোনও চিনা সংস্থাকে বরাত দিই, তখন সেটা চিনের অর্থনীতিকে সাহায্য করা হবে। আমরা সেটা করি না। আমরা দেশিয় সংস্থাদের দিয়েই পরিকাঠামো তৈরি করাই।” পাশাপাশি তিনি আরও জানান, ভিভোর সাথে তাদের ২০২২ পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে। সুতরাং কোনো ভাবেই এই মূহুর্তে তাদের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্ভব নয়। পরবর্তী চুক্তিতে তারা পরিস্থিতির ওপর বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে চলতি সপ্তাহে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন ২০ সৈনিক। তারপর থেকেই চিনা দ্রব্য বয়কটে গোটা দেশে জ্বলছে ক্ষোভের আগুন। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র ব্যবসার স্বার্থে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের চিনা সংস্থার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন না করা সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই ফুঁসছে গোটা দেশ।