নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: পড়নে খাকি পোশাক এবং গলায় গেরুয়া রঙের আই কার্ড পরিহিত উত্তরপ্রদেশ পুলিশরা রুটমার্চ করছে আলিপুরদুয়ারের রাস্তায়, ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ফের কেন্দ্রীয় বাহিনী আনা হয়েছে আলিপুরদুয়ারে। জানা গিয়েছে, তাদের মধ্যে এক কোম্পানি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং আরেক এক কোম্পানি বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স। জানা গিয়েছে, এই দুই কোম্পানির মধ্যে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আলিপুরদুয়ারে এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বারোবিশায় মোতায়ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার আলিপুরদুয়ার চৌপথি এলাকা থেকে আলিপুরদুয়ার জংশন নর্থ পয়েন্ট পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এক কোম্পানি রুটমার্চ করেছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, ধমকাতে চকমাতে কি এখানে নিয়ে আসা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে! এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল প্রার্থী সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি রাস্তায় একদল পুলিশ যেতে দেখালাম। দেখি তাঁরা সকলেই নন বেঙ্গলি। দেখেই তাদের বুঝতে পারলাম তাঁরা বেঙ্গল পুলিশ নন। জিজ্ঞেস করতেই তাঁরা বললেন, তাঁরা ইউপি পুলিশ। তাদের গলায় গেরুয়া রঙের আই কার্ডও ছিল। উত্তরপ্রদেশের পুলিশ এসে কি আমাদের চমকাচ্ছে? বাংলা এগুলো কখনই মেনে নেবে না’।
সৌরভ আরও বলেন, বাংলার পুলিশ দিয়ে ভোট করাতে চাইছে না কমিশন, তাহলে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ কেন? নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায়? প্রশ্ন তোলেন সৌরভ। তিনি বলেন, এতে এটাই প্রমাণ হল যে, বহিরাগত উত্তরপ্রদেশের পুলিশ গুন্ডাদের এখানে নিয়ে এসে আমাদের ধমকানোর চমকানোর চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি জানিয়েছেন এবং নির্বাচন কমিশনেরও উচিৎ এই ব্যাপারে প্রার্থীকে অবগত করানো যে, এপ্রিলের ১০ তারিখে যেখানে ভোট, সেখানে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ কেন মার্চ মাসে রুটমার্চ করছে।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ, তারা গেরুয়া একটা রিবন পড়ে আসছে, গেরুয়া একটা বিজেপির পতাকার রং, পুলিশ কি এরকম পরতে পারে না কি! তৃণমূল প্রার্থী একথাও বলেন, বাংলার পুলিশ দিয়ে ভোট হবে না কিন্তু উত্তরপ্রদেশের পুলিশ দিয়ে ভোট করাবে কমিশন, এটা কোন ধরণের নিরপেক্ষ ব্যাপার, কি আইন আছে এ নিয়ে, তা তিনি জানেন না বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন এদিন। যদিও তৃণমূলের এই অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী সুমন কাঞ্জিলাল।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী বারবার প্রচার সভা চলাকালীন অভিযোগ করেছেন যে, বহিরাগত গুন্ডাদের নিয়ে আসা হচ্ছে, ভোট লুঠ হবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। শুক্রবারেই মেদিনীপুরের দাসপুরের সভা থেকে তিনি অভিযোগ করেন, ‘সব খবর আমাদের কাছে আছে। আপনারা জানেন, কাঁথি বাসস্ট্যান্ড থেকে রাত এগারোটার সময় উত্তরপ্রদেশের ৩০ জন গুণ্ডা অস্ত্র হাতে ধরা পড়েছে। বুঝতে পারছেন আপনারা, কী করার ষড়যন্ত্র করছে এঁরা, মীরজাফররা? এদের জবাব দেবেন। আর সমস্ত রকম সুবিধা চাইলে আমাকে ভোট দেবেন।’ আর মুখ্যমন্ত্রীর এমন অভিযোগের পরের দিনই আলিপুরদুয়ারের রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেল উত্তরপ্রদেশের পুলিশকে।