নিজস্ব সংবাদদাতা: মুখে মাস্ক নেই, বাজারে আড্ডা! চুটিয়ে চলছে ফুচকা, ভেলপুরি কোনও সতর্কতা ছাড়াই। একের কাঁধের ওপর হামলে পড়ে অপরের বাজার করা। পুলিশ নাজেহাল কোভিড বিধি পড়াতে অন্যদিকে হু হু করে খড়গপুরে বাড়ছে সংক্রমন। দ্বিতীয় করোনা ঢেউয়ে খড়গপুরে মাত্র ১৫দিনে চারশর কাছাকাছি সংক্রমন। মৃত্যু জেনে না জেনে অন্ততঃ ১০। তবুও হুঁশ নেই শহরের। আর বেপরোয়া সেই শহরে শনিবার করোনা আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল আবার। মৃত্যু হল এক ব্যবসাায়ী ও অবসরপ্রাপ্ত একজন গুণী শিক্ষকের।
শনিবার রাত ৮টার কিছু আগে শালবনী করোনা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তালবাগিচার বাসিন্দা ফণীভূষণ কর্মকারের। পার্শ্ববর্তী ডিভিসি বাজারে একটি দোকান চালাতেন তিনি।বেশ কিছুদিন ধরেই হৃৎযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন। বাড়ির লোকেরা তাঁকে কলকাতার উদ্দেশ্যে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। এরপর ১৮এপ্রিল হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেখানেই করোনা ধরা পড়ে তাঁর। চিকিৎসা চলছিল সেখানেই। বেশ ব্যয়বহুল চিকিৎসা স্বত্ত্বেও অবস্থার তেমন কোনও উন্নতি না হওয়ায় পরিবারের লোকেরা ওই হাসপাতালের পরামর্শ মতই ফেরৎ নিয়ে আসে খড়গপুরে।
শুক্রবার তাঁকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা শালবনী করোনা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার সকালে তাঁকে শালবনী করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিনই সন্ধ্যার কিছু পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খবর পাঠায় মৃত্যু হয়েছে কর্মকারের। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
এদিনই মৃত্যু হয়েছে সত্যকিঙ্কর ঘোষের। মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা সত্যকিঙ্কর ঘোষ অতুলমনি পলিটেকনিক উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক ছিলেন। ছাত্রদরদী ও সদালাপী বলে তাঁর অত্যন্ত সুনাম ছিল। ইংরেজি সাহিত্যের পন্ডিত এই মানুষটির অগণিত ছাত্রছাত্রীরা আজ নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। প্রায় এক দশক আগে অবসর নিয়েছিলেন তিনি। কয়েকদিন ধরেই সামান্য অসুস্থ ছিলেন। পরে করোনা ধরা পড়ে তাঁর। শনিবার মৃত্যু হয় তাঁরও।
উল্লেখ্য গোটা শহর জুড়েই সংক্রমন যেমন ছড়িয়েছে তেমনই বর্তমান শহরের করোনা মানচিত্রে শীর্ষে রয়েছে তালবাগিচা ও মালঞ্চ। গত কয়েকদিন ধরেই এই দুই এলাকা থেকে একাধিক সংক্রমনের খবর আসছে। যেমন গত ১৮ তারিখ ধরলে ২৩ তারিখ এই ছ’দিনে মালঞ্চ, বিবেকানন্দপল্লী, রাখাজঙ্গল ও বালাজি মন্দির এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২ জন। শুধু ২৩ তারিখেই মালঞ্চয় একই পরিবারের চারজন আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে তালবাগিচা, সুকান্তপল্লী, রথতলা ও ডিভিসি মিলিয়ে ওই ৬ দিনে আক্রান্ত ১৪ জন। এই এলাকায় সর্বোচ্চ ৬ জনের সংক্রমন নজরে এসেছে ২১ এপ্রিল। ২৩ শে এপ্রিল আক্রান্ত হয়েছেন ৫জন। ছবি ও তথ্য ঋণ- সৌমেন চক্রবর্তী