নিজস্ব সংবাদদাতা: খাবারের সন্ধানে মধ্যরাতে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে তান্ডব চালালো দাঁতাল। আর সেই হামলার জেরে কেউ পালালো ঘুমন্ত শিশু আবার কেউ পালালেন বৃদ্ধা মাকে তুলে। তবে প্রান বাঁচলেও শেষ রক্ষা হয়নি। আতঙ্ক কাটিয়ে বাড়ির সামনে দেখলেন ঘর নেই, মাটিতে মিশে গেছে। শুক্রবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের গুড়গুড়িপাল থানার চিলগোড়ায় গ্রামের ঘটনায় গৃহহীন হয়ে পড়েছেন ৫ টি পরিবার।
হতদরিদ্র পরিবার গুলির বক্তব্য কারও একটা বাড়িতে দু’মুঠো ধান চাল থাকলে তা খেয়ে হয়ত বাকি বাড়ি গুলোকে রেহাই দিত হাতি কিন্তু এতটাই গরিব ওই পরিবারগুলি দিনের খাবার দিনেই জোগাড় করতে পারেননা তো জমিয়ে রাখবেন কি?
গ্রামের বাসিন্দা লব ধাউড়্যা বলেন, তখন প্রায় রাত বারোটা। ছোট রুমের মধ্যে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও ছোট ছেলে ঘুমিয়ে পড়েছে। বড় ছেলে আমার মোবাইল নিয়ে একটা বই (সিনেমা) দেখছিল। উপর পাড়ার একজন ফোন করে জানালো হাতি বেরিয়েছে। তখন ঘুমন্ত ছেলে, মাকে টেনে তুলে কোন রকমে দৌড়ে পালায় স্কুল ঘরের দিকে। গ্রামের সবাই ছুটছে বাঁচার জন্য। হাতি পালানোর পর ঘরে ফিরে দেখি ঘুরতা ভেঙে দিয়েছে। থাকার মতো কোন অবস্থা নেই’।
একই হাল হারাধণ ধাউড়্যার। বাড়ি ছেড়ে পালানোর সুযোগ পাননি কেউ। বাড়ির মধ্যে দুই ছেলে, স্ত্রী, ভাই। হারাধনের স্ত্রী গীতা ধাউড়্যা বলেন। বিকট আওয়াজ করে বাড়ির দেওয়াল ভাঙছে। সবাই মিলে বাড়ির চিলে কোঠায় বসে রয়েছি, ভয়ে কাঁপছি। বেশকিছুক্ষন তান্ডব চালিয়ে এগিয়ে গেল তরুলতা পাতরদের বাড়ির দিকে। সকালে শুনলাম ওঁদের বাড়িও ভেঙেছে’। ঘটনার পর আতঙ্কে গোটা গ্রাম।
লব , হারাধনদের বক্তব্য জঙ্গলে থাকলে হাতি ট্যাক্স দিতেই হয়। ক’দিন আগেই গ্রামে একটি মুড়ি মিলের দেওয়াল ভেঙেছিল। চাল, মুড়ি খেয়ে দিব্যি গটগট করে জঙ্গলে চলে গেল। কিন্তু হাতি ঠাকুর শুক্রবার রাতে ভুল জায়গায় হানা দিল। আমাদের কিছুই নাই তো কী করব? কোনও রকম প্রাণ বাঁচিয়েছি। আপাতত সবাই মিলে স্কুল ঘরেই আছি। বন দপ্তরের আধিকারিকরা খতিয়ে দেখে ক্ষতি পূরনের জন্য আবেদন করতে বলেছেন।