নিজস্ব সংবাদদাতা: কয়েকদিন নিরব থাকার পর ময়দানে নেমেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। রাজ্য চষছে কেন্দ্রীয় টিম। রাজ্য আর কেন্দ্রের এন্তার চিঠি আদান প্রদান। মাঝে মধ্যে রাজ্যপালের নরম গরম বিবৃতি। সব মিলিয়ে পিচ তৈরি হচ্ছে ২০২১ বিধানসভার। তৃণমূল আর বিজেপি দুজনই সেই পিচ নিজের ফেভারে নিয়ে যেতে মরিয়া। রাজ্যের পরিস্থিতি ঢাক পিটিয়ে বলার মত নয়, ধিরে ধিরে করোনা যত না বাড়ছে তারও চেয়ে বাড়ছে খিদে। রেশনে ত্রানে অসংকুলান সেই খিদে। বে পরোয়া, বে তমিজ সেই খিদে জন্ম দিচ্ছে বিদ্রোহের। খালি পেটে বৈষম্য বড় চোখে পড়ে তাই বিদ্রোহ আরও প্রকট হয়। বাঁকুড়া থেকে বাদুড়িয়া লক্ষন ভাল নয়। এমনই পরিস্থিতিতে সুখী গৃহকোন ভেঙে দিল্লি থেকে কার্গো বিমানে মমতা ব্যানার্জীর কাছে উড়ে এসেছেন পি.কে। শোনা যাচ্ছে ভাইপোর জরুরি তলবেই দমদম অবতরন ৫০০কোটি বরাতি পি.কের, ২০২১ শের ত্রাতার।
লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলের পরেই প্রশান্ত কিশোরের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোট ম্যানেজার উৎরেও দিয়েছেন তিন উপনির্বাচন। ‘দিদিকে বলো’র সাফল্যের পর ‘বাংলার গর্ব মমতা’ আর তারপরে করোনার বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে সামনে দাঁড়ানোর সেই ভুবন মোহিনী ছবি! সবই পি.কের ডিজাইন। করোনার বিরুদ্ধে শুরুতে সবমহলে প্রশংসা কুড়োলেও ধীরে ধীরে বদলেছে চিত্রটা। রাজ্যের বিরুদ্ধে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা চাপার চেষ্টা এবং বেশি সংখ্যক টেস্ট না করার অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। সংক্রমিত এলাকা নিয়েও কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত বেড়েছে। প্রথমে শাড়ির আঁচল, পরে রুমাল আর এখন মুখে এন-৯৫ মাস্ক। অসুখ তবে সত্যি গভীরে ? এই পরিস্থিতিতে ফের পিকের শরণাপন্ন হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ‘ক্রাইসিসি ম্যানেজার’ পিকে-কে জরুরি তলব করেছেন তৃণমূল নেত্রী।
লকডাউনে দিল্লিতেই ছিলেন প্রশান্ত কিশোর। সামনেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঘরবন্দি থাকলেও লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি-সহ একাধিক ইস্যুতে পরিসংখ্যান দেখিয়ে কেন্দ্রকে একের পর এক খোঁচা দিয়ে যাচ্ছিলেন পিকে। অন্যদিকে, বিজেপির আক্রমণ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সংঘাতের জেরে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা মোকাবিলায় একের পর এক কটাক্ষের শিকার হচ্ছে রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাক পেয়ে জরুরি ভিত্তিতে কলকাতায় চলে এসেছেন পিকে। সূত্রের খবর, দিল্লি থেকে কার্গো বিমানে কলকাতায় আসেন প্রশান্ত কিশোর। যেসময়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল কলকাতায় এসে পৌঁছয়, তখনই কলকাতায় আসেন পিকে।
দলীয় সূত্রে খবর, কলকাতায় এসেই অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পিকে। করোনা পরিস্থিতিতে বিজেপির আক্রমণ প্রতিহত করার রণকৌশল নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে দুজনের মধ্যে। পালটা রণকৌশল তৈরি করছেন প্রশান্ত কিশোর। জানা গিয়েছে, যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমগুলিতে বিজেপি রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে তার পালটা দিতেই থিংকট্যাঙ্ক পিকের দ্বারস্থ তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের মতে, একুশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের শাসকদলকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ঘিরে ফেলতে বিজেপির আইটি সেল এবং গেরুয়া শিবিরের নেতারা মরিয়া। আগামী বছরের নির্বাচনের জন্য পিচ তৈরি করতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। আর সেই পিচে জল ঢালতে পি.কে এখন মূখ্যমন্ত্রীর ভিস্তিওয়ালা।