ওয়েব ডেস্ক : ভারতে করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে বিশেষজ্ঞরা সোশ্যাল ডিস্টেন্স মেনে চলার পাশাপাশি দেশবাসীকে সাবধানতা অবলম্বন করে মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজারেই ভরসা রাখার কথা বলেছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত হওয়া সম্ভব হলেও তা স্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকর। এর থেকে স্কিন ক্যান্সারের প্রবণতা প্রবল। ফলে করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার করার পরামর্শ দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
শনিবার এবিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা বিভাগের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল আর কে ভার্মা জানান, “এই অনিশ্চিত সময়ে এমন এক ভয়াবহ ভাইরাস আক্রমণ হবে, কেউ ভাবতে পারেনি। সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহার করুন, নিয়মিত গরম জল পান করুন এবং বার বার হাত ধুয়ে ফেলা অভ্যাস করুন। অতিরিক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন না।” স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের তরফে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল যে, অতিরিক্ত স্যনিটাইজার ব্যবহার করলে স্যানিটাইজারে থাকা অ্যালকোহলের প্রভাবে ত্বকে উপস্থিত ব্যাক্টেরিয়ার মৃত্যু হয় ঠিকই। কিন্তু সেই সাথে হাতের চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে হাতের তালু খসখসে হয়ে যাচ্ছে৷ তাঁদের মতে, যদি সাবান ও জল পর্যাপ্ত থাকে সেক্ষেত্রে হাত পরিস্কার রাখতে স্যানিটাইজারের থেকে সাবান ত্বকের পক্ষে অনেক বেশি নিরাপদ।
এদিকে প্রতিদিন দেশে উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমণ৷ শনিবার দেশে নতুন করে সংক্রমণের শিকার ৪৮ হাজার ৬৬১ জন৷ ফলে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫২২ জন। তার মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫৭৭ জন। তবে এখনও পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ৪ লক্ষ ৬৭ হাজার ৮৮২ জন। তবে চিন্তার বিষয় এই যে প্রতিদিন সংক্রমণ ক্রমশ রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ গত ১৫ দিনে প্রতিদিনই নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়াচ্ছে৷ যা স্বাভাবিকভাবেই বিশেষজ্ঞদের কাছে খুবই চিন্তার বিষয়।
এদিকে শুধুমাত্র শনিবারই দেশে ৭৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৭৮ জন মহারাষ্ট্রের, ১০৮ জন কর্নাটকের, ৮৮ জন তামিল নাডুর, ৫৯ জন উত্তর প্রদেশের, ৪৯ জন অন্ধ্র প্রদেশের, ৩৫ জন পশ্চিমবঙ্গের, ৩২ জন দিল্লির, ২৬ জন গুজরাতের, ১৪ জন জম্মু ও কাশ্মীরের, ১১ জন মধ্য প্রদেশের এবং রাজস্থান ও তেলেঙ্গানার ৮ জন করে বাসিন্দা রয়েছেন। এ ছাড়া অসম, ছত্তিশগড় ও ওড়িশায় গড়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। পঞ্জাবে ৫ জন এবং কেরালা ও হরিয়ানাতে ৪ জন করে মারা গিয়েছেন। বিহার ও ঝাড়খণ্ডে ৩ জন করে, পুদুচেরি, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে ও নাগাল্যান্ডে ১ জন করে বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই মূহুর্তে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে প্রতিদিন বাড়ছে তাতে স্বাভাবিকভাবেই বিশেষজ্ঞদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে মৃতের হার অনেকটাই কম যা স্বস্তি দিচ্ছে দেশবাসীকে।