শশাঙ্ক প্রধান: শনিবার সকালে ভারতকে টোকিও অলিম্পিকের ভারতকে প্রথম পদক এনে দিয়েছিলেন মীরাবাঈ চানু । ভারোত্তোলনে ৪৯ কেজি বিভাগে রুপো জয়ের খবর আসার পরই আনন্দের খবর এসেছে কলকাতার বঙ্গ তনয়া সুতীর্থার হাত ধরেও। লিন্ডার ম্যাচ উইনিং সেটে দুরন্ত জয় ছিনিয়ে এনে টেবিল টেনিসে পদক জয়ের লড়াইয়ে পরের রাউন্ডে পৌঁছে গেছে কলকাতার সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়। শনিবার এই দুই খবরে চাঙ্গা হওয়া বাংলার চোখ এখন প্রণতির দিকে।
টোকিও থেকে ৫হাজার ২৫০ কিলোমিটার দুরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার এক অখ্যাত গ্রামকে বিশ্ব পরিচিতি এনে দিয়েছে প্রণতি নায়েক। যে গ্রামের নাম করকাই, চককৃষ্ণদাস। ২৫শে জুলাই, রবিবার সেই করকাই চককৃষ্ণদাস গ্রামের বাড়িতেই টিভিতে চোখ রাখবেন প্রণতির বাবা শ্রীমন্ত নায়েক এবং মা প্রতিমা নায়েক। ভারতীয় সময় ভোর সাড়ে ৬টায় গর্বের মেয়ের জন্য টিভির সামনে ঝুঁকে পড়বে সারা পিংলাও।
এক সময় বাস চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন শ্রীমন্ত। এখন আর বাস চালাননা, নিজের জবকার্ডে ১০০দিনের কাজ করেন। শনিবার দুপুরে নিজের বাড়িতে বসেই শ্রীমন্ত জানালেন, “মেয়ে দেশের হয়ে খেলতে গেছে অলিম্পিকে এতেই আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে। সামান্য পরিবার আমাদের। তিন মেয়ে, তাদের কারুরই হয়ত নূন্যতম চাহিদাটুকু মেটাতে পারিনি। তারপরও মেয়ে আমাদের নাম, পিংলার নাম আর বাংলার সম্মান পৌঁছে দিয়েছে অলিম্পিকে। এর চেয়ে বড় কী হতে পারে। হারা জেতা পরের কথা। বাবা-মা হিসাবে আমরাতো জিতেই গিয়েছি।”
মেয়ের কথা উঠতেই আনন্দের অশ্রু গড়িয়ে পড়ে প্রতিমার চোখ দিয়ে। আঁচলের খুঁটে চোখের জল মুছে বলেন, ” রবিবার ভোরে টিভির সামনে বসব ওর খেলা দেখতে। অতবড় জায়গায় ও নিজের জিমানস্টিক দেখাবে। সেটা দেখতেই বসা। আমি জানি ও ওর সবটা দিয়েই এই লড়াইয়ে নামছে। কিন্তু জেতা হারাটা শুধুই ওর হাতে নেই। তাই সেটা নিয়ে ভাবছি। ও ওর সবটা দিতে পারুক ভগবানের কাছে সেটাই প্রার্থনা। ওকে বলেছি, সব ভুলে গিয়ে মন দিয়ে প্র্যাকটিস করে যা।”
করকাই গ্রামের মোড়ে বড় ওভারহেড ট্যাঙ্কের মাঠে জমে আছে জটলা। সবার মুখেই প্রণতির কথা। রিপোর্টার শুনেই ছুটে আসে বাদল মাইতি, জিতেন মহাপাত্র, আলোক দাসেরা। বলে, ‘আমাদের কথাও লিখবেন, আমরাও কাল সকাল সকাল বসছি টিভির সামনে। আমাদের গ্রামের মেয়ে নামে অলিম্পিকের মাঠে আর আমরা দেখবোনা? আজ তো আমরা গোটা গ্রাম ঘুরে ঘুরে জানিয়ে দিয়েছি রবিবার সকাল সাড়ে ৬টায় প্রণতির খেলা রয়েছে। ছবি-ট্যুইটার