নিজস্ব সংবাদদাতা: এবার তিনিই নাকি সর্বাধিনায়ক। পুরভোট থেকে বিধানসভা তাঁরই পরামর্শ মেনে মমতা ব্যানার্জী টিকিট বিলি করবেন। গ্রাম থেকে শহরে নেমে পড়েছে তার দল টিম পি.কে। এলাকার নাড়ি নক্ষত্র টিপে জেনে নিচ্ছে দলীয় কর্মী, কাউন্সিলর, বিধায়কদের কালো খাতার হিসাব নিকেশ সেরে নিচ্ছে। এলাকার বিশিষ্ট মানুষদের সংগে যোগাযোগ করে জেনে নিচ্ছে নেতাদের পারফরমেন্স। আর তারপরই পি.কের দপ্তরের চলে যাচ্ছে ক্রিডেন্সিয়াল রিপোর্ট। টিকিট পাওয়া, না পাওয়া এখান থেকেই ঠিক হবে।
আর এই সু্যোগকে ব্যবহার করতে উঠে পড়ে লেগেছে তৃণমূলের মধ্যেই থাকা একদল নেতা কর্মী যাঁরা ক্ষমতায় থাকা নেতাদের বিরুদ্ধে সরব, বিশেষ করে তাঁদের ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে। একবার পি.কের নজর কাড়তে পারলে প্রার্থী হওয়ার টিকিট বাতিল। সম্ভবত এরকমই ঘটনার নজির কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ড। যেখানকার রাস্তা ছেয়ে গেছে, ‘সৌজন্যে কাটমানি , কলকাতা টু মন্দারমনি।’ ব্যানারে। ব্যানার দেখা গেছে নীলরতন সরকার হাসপাতাল এবং আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের গেটেও। আক্রমনের লক্ষ্য কাউন্সিলার মৌসুমী দে। ওই ব্যানারে তুলে ধরা হয়েছে তথ্য সহ বেশকিছু আভিযোগ যাতে বলা হয়েছে কাটমানির সৌজন্যে কী ভাবে পাতি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে কাউন্সিলর হওয়ার পর নামে বেনামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালকিন হয়েছেন মৌসুমী।
উল্লেখ রয়েছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার, সার্পেনটাইন লেন, লেবুতলা সহ কলকাতার পাঁচ জায়গায় জমি অথবা ফ্ল্যাট, রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের সৈকত শহর মন্দারমনির সোনামুইতে জামাইবাবুর নামে জমি কেনার ইঙ্গিতও। ছড়া কেটে বলা হয়েছে, ‘দোকান রিসর্ট কিনছো বাড়ি, আজকে হাটে ভাঙল হাঁড়ি।” ঘটনার নেপথ্যে পরোক্ষভাবে দলীয় কর্মীদের দায়ী করেছেন মৌসুমী দে । বলেন , ‘টানা ১০ বছর ধরে ওই এলাকার কাউন্সিলর রয়েছেন তিনি। তবে এবার মৌখিক ভাবে শোনা গেছে ৫০ নম্বর ওয়ার্ড সংরক্ষিত নয়, অথচ তাকে প্রার্থী করা হতে পারে, তখন থেকেই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ রকম ঘটনা এই প্রথম নয়। আগেও এ রকম পোস্টার পড়েছিল। গত জুলাই থেকেই মোটামুটি নিশ্চিত যে আমিই টিকিট পাচ্ছি। তারপর থেকেই কুৎসা রটানো শুরু হয়েছে।’
এদিকে মৌসুমী দের এই বক্তব্যের পরই, তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল যে ফের প্রকাশ্যে এল তা বলাই বাহুল্য। যদিও সংরক্ষণের জেরে গোষ্ঠী কোন্দল যে কোন ভাবেই মানা হবে না এমনটা দলীয় বৈঠকে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ভবনে বৈঠকে এই বিষয়ে কাউন্সিলরদের কড়া বার্তা দিয়ে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। পারফরম্যান্স হবে শেষ কথা। সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কেউ যদি মনে করে থাকেন তার পরিবারের লোককে টিকিট দেবে সেটা হবে না। পরিবারের লোকজন নেওয়া হবে কিনা সেটা বিবেচনা করবে দল।’ অতঃপর মৌসুমী বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হয় সেটাই এখন দেখার।য