নিজস্ব সংবাদদাতা: এক তরুনীর নামে বানানো হয়েছে হয়েছে একটি হোয়াটস্যাপ গ্রুপ। সেই গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন জনকে। এমনকি রাখা হয়েছে তরুনীর বাবাকেও। এরপর প্রতিদিনই নিয়ম করে প্রতিদিনই তরুনীর ছবি সুপার ইম্পোজ করে নানান ভঙ্গিমায় নগ্ন ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সেই গ্রুপে। অভিযুক্ত ওই তরুন তৃনমূলের এক যুব নেতার একদা ঘনিষ্ট বলেই জানা গেছে। যদিও তৃনমূলের দাবি সে দলের কেউ নয়।
এই হোয়াটস্যাপ কারবারটি নতুন হলেও এই নোংরা খেলাটা ফেসবুকে চলছিল বহুদিন ধরেই কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় সম্প্রতি এই নোংরামি শুরু করে ওই যুবকটি। উদ্দেশ্য, মেয়েটির এমন একটি প্রতিমূর্তি গড়ে তোলা যাতে কোনও যুবকই তাকে বিয়ে করতে আগ্রহী না হয়। ঘটনা খোদ মেদিনীপুর শহরের। এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সপরিবারে পুলিশের দ্বারস্থ ওই যুবতী৷ ঘটনার পরেই ফেরার ওই যুবক ৷ অভিযোগ দায়ের হয়েছে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানাতে ৷
অভিযুক্তর খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুরের সিপাইবাজার এলাকার বাসিন্দা ওই তরুনী। মুসলিম পরিবারের ওই যুবতী ও তার পরিবারের অভিযোগ প্রতিবেশী যুবক সেখ আকিবের বিরুদ্ধে ৷ সম্প্রতি অভিযুক্ত যুবক যুবতীর নানা অশ্লীল ফটো ভাইরাল করে সোস্যাল মিডিয়াতে ৷ একটি হওয়াটসএপ গ্রুপ করে সেই গ্রুপে ছবিগুলি ছাড়ে ৷ যেখানে ট্যাগ করা হয়েছে যুবতীর বাবাকেও ৷ বুধবার ওই গ্রুপে মেয়ের নামে নানা অশ্লীল ছবি দেখে যুবতী তাঁর বাবা ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হাজির হয় মেদিনীপুর শহরের কোতয়ালি মহিলা থানাতে ৷
যুবতীর জানিয়েছে, আকিব তাকে রাস্তাঘাটে এতটাই উত্যক্ত করত যে বিএসসি পাশ করার পর এমএসসিতে ভর্তি হতে পারেনি সে। বাড়ির বাইরে গেলে সর্বদাই তার পিছু নিত। শরীরে হাত দিত এমনকি পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখাত যে তার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখলে তরুনীর মা বাবা ভাইকে গুলি করে মেরে দেবে। তরুনী জানিয়েছে, “আমাকে বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিত ওই যুবক যে কারনে আমি নিরাপত্তাহানতীয় আমি আমার উচ্চ শিক্ষা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হই। এরপর পরিবার আমার বিয়ের উদ্যোগ নেয় কিন্তু যেখানেই সমন্ধ শুরু হত সেখানেই আকিব বিভিন্ন নোংরা ছবি পাঠিয়ে সম্পর্ক ভেঙ্গে দিতো ৷ ওর দাবি ওর সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে হবে। ”
যুবতীর আরও দাবি, “এতসবের পরও ওর প্রস্তাবে রাজী না হওয়াতে আমাকে ভয় দেখাতো শাসক দলের নামে ৷ নিজেকে শাসক দলের যুব নেতার ঘনিষ্ট দাবি করে পরিবারের লোকদের প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দিতো। আমি পুলিশে আগে জানিয়েছিলাম৷ পুলিশ ওকে সতর্ক করেছিল।কিন্তু তারপরও এই ঘটনা ৷ আমি ওই শাস্তি গ্রেফতার দাবি করছি।”
বুধবার মহিলা থানাতে অভিযোগ জমা করে যুবতীর বাবার দাবি পুলিশের কাছে ওই যুবক আগে মুচলেকা দিয়ে বলেছিল এসব আর করবোনা ৷ ফের এই সব অতিষ্ট করে মানহানী করলো ৷ তারপরো হুমকি দেখাচ্ছে খুন করার, শাসকদলের।” এবিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃনমূলের যুব সভাপতি প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “আমাদের দলে অনেকেই থাকে ৷ ওই নামের কাউকে আমি সেভাবে চিনিনা ৷ যে কেউ দলের নামে বলতে পারে ৷ তবে আমি পুলিশকে বলব পুলিশ ব্যাবস্থা নিক ৷ দল এসব বরদাস্ত করবেনা।”
তবে আকিব যে পাক্কা তৃনমূলের কর্মী এবং প্রসেনজিৎয়ের ঘনিষ্ট এটা জানাচ্ছে স্থানীয় মানুষজন। স্থানীয় মানুষেরা আরও জানিয়েছন দলের নাম করে এলাকায় যথেষ্টই রোয়াব দেখিয়ে বেড়াত আকিব। প্রথম দিকে ওই তরুনীর সঙ্গে আকিবের একটি সম্পর্ক গড়েও ওঠে কিন্তু মদ্যপ এবং বেয়াদপ আকিবের চরিত্র জানতে পেরেই তরুনী সরে আসে। যেটা মেনে নিতে পারেনি আকিব। ইদানিং তরুনীকে বিয়ে দেওয়ার মরিয়া প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল পরিবারের তরফ থেকে আর তারপরই আকিব এই নোংরামি আরও বাড়িয়ে দেয়। পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি সেই মত। তবে এখন পুলিশ আকিবকে গ্রেপ্তার করতে মরিয়া।