Homeএখন খবরতাল কাটল আরও এক তৃনমূল বিধায়কের! মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গরহাজির থেকে জল্পনা বাড়ালেন...

তাল কাটল আরও এক তৃনমূল বিধায়কের! মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গরহাজির থেকে জল্পনা বাড়ালেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক

অশ্লেষা চৌধুরী: আবারও ফাটল ধরল শাসক দলের অন্দরে। এবারে পুরশুড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গরহাজির বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। শুধু তাই নয়, আগামীকাল মঙ্গলবারই যা বলার বলবেন বলে জানিয়ে দিলেন বিধায়ক, আর উত্তরপাড়ার বিধায়কের এই কাণ্ডে ফের সূত্রপাত জল্পনার।

হুগলির পুরশুড়ায় আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কাণ্ডের পর এই প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু তাতেই অনুপস্থিত থেকে দলের অস্বস্তি বাড়ালেন হুগলির বেসুরো তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল।

তাঁর অভিযোগ, আজকের সভায় তাঁকে কোনও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এমনকি তৃণমূল নেত্রীর জনসভার প্রস্তুতি বৈঠকেও তাঁকে ডাকা হয়নি। এমনকি উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর বাবু দলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে জানান, ”উন্নয়নে ঘাটতি থেকে গিয়েছে। সেটা মানুষের মধ্যে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।” আর সেটা শুধু তাঁর কেন্দ্রে নয়, বিভিন্ন জায়গাতেই বলে দাবী করেছেন তিনি। তাঁর সাফ কথা, “এগুলোর সমাধান করতে না পারলে একুশের লড়াই কঠিন হবে।”

আর শুধু এবারেই যে তিনি এমনটা বললেন, তা কিন্তু নয়। তার আগেও জেলায় দলের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রবীর বাবু। লোকসভা নির্বাচনে হুগলি আসনে তৃণমূলের পরিবর্তে বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায় জয়ী হলে প্রবীর ঘোষালকে বলতে শোনা গিয়েছিল, কিছু তৃণমূল নেতার মাতব্বরির জেরে বিজেপির কাছে হেরেছে তৃণমূল।

নির্বাচনের পরে শেওড়াফুলির সত্যজিৎ ভবনে তৃণমূলের এক সভায় তিনি বলেছিলেন, ‘নিজেদের সব মাতব্বর মনে করছি। তাই হেরে গিয়েছি। নিজেদের সংশোধন না করেই বিজেপিকে শত্রু মনে করছি।‘

সেই সময় কয়েকজন বাধা দিলেও নিজের অবস্থানে অনড় থেকেছেন প্রবীর ঘোষাল। বলেছিলেন, তিনি তাঁর অবস্থানে ঠিক থাকবেন। তাঁকে থামানো যাবে না।
গত কয়েকদিন ধরে দলের সঙ্গে আরও যেন দূরত্ব বাড়িয়ে চলেছেন বিধায়ক। কখনও দলের সংগঠন নিয়ে, কখনও নিজের এলাকার সরকারি প্রকল্পের কাজ নিয়ে মুখ খুলেছেন। এমনকি তাঁকে ভোটে হারানোর জন্য চক্রান্ত চলছে বলেও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে, তাঁকে সামলাতে খোদ দলনেত্রীকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। তাঁকে ডেকে কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাতেও যে খুব একটা কাজ হয়নি, তার প্রমাণ আজকের সভায় তাঁর অনুপস্থিতি।

আর বিধায়কের এমন সুরে দল বদলের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই। কারণ কিছুদিন আগেই দলত্যাগী শুভেন্দু রাজীব ও প্রবীর বাবুর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, যদি কর্মচারী হিসেবে কাজ করতে চান তবে নিজের দলেই থাকুন, আর যদি সহকর্মী হিসেবে কাজ করতে চান, তবে পদ্ম শিবিরে যোগ দিন। এর একদিন পরেই বন মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আজ মুখ্যমন্ত্রী সভায় গরহাজির প্রবীর বাবু। আবার মঙ্গলবারেই যা বলার বলবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই এটি শাসকদলের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও ডজন খানেক তৃণমূল নেতা-নেত্রীর তালিকা পদ্ম শিবিরে যোগ দানের যে তালিকা ঘুরছে, তাতেও নাম রয়েছে প্রবীর ঘোষালের। এখন এনারা কখন সেই পথে পা বারান, তা শুধু সময়ের অপেক্ষা।

প্রসঙ্গত, এদিন পড়শুরায় মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সভা ছিল। এদিনের সভা থেকে তিনি শুভেন্দু সহ অন্যান্য দল ত্যাগী ও বেসুরোদের ইঙ্গিত করে কড়া বার্তা দেন, তিনি বলেন, ভোটের পর যাঁরা আসতে চাইবেন, তাঁদের আমরা নেব না, যারা যেতে চায়, তাড়াতাড়ি ল্যাজ গুটিয়ে পালাও। সভা থেকে মমতা স্লোগান দেন, হরে কৃষ্ণ হরে রাম, বিদায় নাও বিজেপি-বাম।‘ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজির জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি বলতে ওঠার সময় জয় শ্রী রাম ধ্বনি ওঠা প্রসঙ্গেও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কয়েকজন ধর্মান্ধ প্রধানমন্ত্রীর সামনে আমায় টিজ করছে। নেতাজিকে নিয়ে অনুষ্ঠানে নেতাজিকেই অপমান করেছ।‘ এদিন আবার সভা চলাকালীন ইন্টারনেট বিভ্রাট ঘটে। ফোন করে প্রোভাইডারকে হুঁশিয়ারিও দেন তৃণমূল সুপ্রিমোর।

RELATED ARTICLES

Most Popular