অশ্লেষা চৌধুরী:মাস কয়েক বাদে বিধানসভা নির্বাচন। কলকাতার মাঠে দল পরিবর্তনের মতই বিজেপি আর তৃনমূলে দল পরিবর্তন চলছে। সংখ্যায় কম হলেও বাদ পড়েনি দু’একজন বাম বিধায়কও। কোনদিকে বাজারদর বেশি। কেউ চলে গেছেন, কেউ যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়ে আবার কেউ এখনও বাজার মাপছেন লাভ ক্ষতির। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নীতি বা আদর্শের জায়গায় ব্যক্তিগত লাভক্ষতির অঙ্কই কাজ করে। তাই ঝুঁকি নিতে সাহস পায়না কেউ কেউ। সেরকমই এক তৃনমূল নেতার দেখা মিলল হুগলির ডানকুনিতে। আর বছর শেষের সেই চমক নিয়েই সরগরম এলাকা।
২৪ ঘন্টাও কাটেনি, সকালের নেওয়া দলবদলের সিদ্ধান্ত বিকেলের মধ্যেই পরিবর্তন; পদ্ম শিবিরে যোগ দেবেন বলে মঞ্চেও উঠেছিলেন, কিন্তু হঠাৎই ভোলবদল, সভাস্থল ছেড়ে নেমে গেলেন কৃষ্ণেন্দু মিত্র। কৃষ্ণেন্দু বাবু ডানকুনি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর! বৃহস্পতিবার সকালেই কৃষ্ণেন্দু বাবু কান্নায় ভেঙে পড়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছিলেন, ‘দল আমাকে সম্মান দেয় না, সেকারণে আমি তৃণমূল ছাড়ছি।‘ ‘আমি দলকে ভালবাসতাম,’ এমন মন্তব্যও করেন তিনি।
তখনই দল ছাড়ার ঘোষণা করেছিলেন প্রাক্তন কাউন্সিলর। সেইমতো শুরু করেছিলেন প্রস্তুতিও। এদিন বিকেলে পঞ্চাশ জন অনুগামীকে নিয়ে বিজেপির যোগদান মেলাতেও হাজির হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। মঞ্চেও দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু, মাঝপথেই যেন তাল কাটল! বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ আসার আগেই সভাস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যান কৃষ্ণেন্দু বাবু। সেইসাথে তাঁর অনুগামীরাও তাঁর পিছু নেন।
কিন্তু, হঠাৎ কেন বদলালেন সিদ্ধান্ত? তিনি বলেন, আমার দাবী ছিল, কেন আমি বিজেপিতে আসছি, তা বলতে দিতে হবে, কিন্তু জানলাম, আমাকে বলতে দেওয়া হবে না। এখানেও আমার সম্মান নেই, এভাবে বিজেপিতে যেতে চাই না, আজ থেকে রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিচ্ছি।
তবে এই প্রসঙ্গে বিজেপির দাবী, ব্যক্তিগত কারণে তিনি চলে যেতে পারেন, ভবিষ্যতে উনি বিজেপিতেই আসবেন। বিজেপির চাঁপদানির আহ্বায়ক পরাগ মিত্র বলেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে চলে যেতে পারেন। বিজেপি বড় দল, এখানে একজন এসে যদি চলেও যায়, তাতে দলের ক্ষতি হবে না। পরে আবার বিজেপিতে আসবে।‘
হুগলি তৃণমূল জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব পাল্টা দাবী করে বলেন, ভুল বুঝতে পেরে এই মত বদল। আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে বিজেপির সংস্কৃতি মেলে না। অনেকেই হয়তো ভুল বুঝতে পেরে চলে যাচ্ছে, বেশিরভাগই তৃণমূলে ফিরে আসবে। সূত্রের খবর, মান ভাঙাতে বিক্ষুব্ধ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।