নিজস্ব সংবাদদাতা: কথায় আছে যার দই তার দই নয়, নেপোয় মারে দই! ঠিক যেমনটা হল নন্দীগ্রামেই। গত মাস খানেক ধরে শুভেন্দু আর শুভেন্দু বিরোধীদের লড়াইয়ের মাঝখান থেকে নন্দীগ্রামের একটি গ্রাম পঞ্চায়েত দখলের পথে এগিয়ে গেল বিজেপি। শুক্রবার নন্দীগ্রাম ২পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত তৃনমূল পরিচালিত বয়াল ১ পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান যোগ দিলেন বিজেপিতে। এদিন কলকাতার বিজেপি রাজ্য দপ্তরে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত থেকে পতাকা তুলে নেন বয়াল ১ পঞ্চায়েতের প্রধান পবিত্র কর এবং উপপ্রধান বিশ্বজিৎ ভূইঁয়া। তৃণমূলের দখলে থাকা এই পঞ্চায়েতের আরও ৬ সদস্যও বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন বলেই জানা গেছে।
উল্লেখ্য নন্দীগ্রামের এই পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতই বর্তমানে তৃণমূলের দখলে । গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১০ সদস্যের বয়াল ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০ সদস্যই ছিল তৃণমূলের। ফলে বোর্ডও ছিল বিরোধী শূন্য। শুক্রবার সেই অবস্থান বদলে গেল পুরোপুরি। তৃণমূলের নিরঙ্কুশ প্রাধান্যে আঘাত হেনে বিজেপিতে চলে গেলেন প্রধান ও উপপ্রধান। আর খবর এই যে নন্দীগ্রামের বুকেই একটি সভা করে আরও ৬ সদস্যের হাতে পতাকা তুলে দেবে বিজেপি। আর তারই সাথে বিজেপি দখল নেবে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের। এমনটাই পরিকল্পনা রয়েছে। বিজেপি রাজ্য কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, “বাকি ৬পঞ্চায়েত সদস্য বৃহস্পতিবারই প্রধান এবং উপপ্রধানের সঙ্গেই যোগ দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু আমরা নন্দীগ্রামের মাটিতেই সেই যোগদান করাতে চাই কারন ওই দিন আরও কয়েকশ পরিবার সদস্য তৃনমূল ছেড়ে আমাদের সঙ্গে আসবেন।”
এদিকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার স্বপক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান পবিত্র কর বলেন, ‘তৃণমূলের নেতৃত্ব উপযুক্ত সম্মান দেয় না। যার জন্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলাম। তবে শুধু আমরাই নয়। এই পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত অন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের আরও অনেক সদস্য বিজেপিতে আসবেন। তৃনমূল ছাড়ার মেগা মেলা দেখবে তৃনমূল। ‘ উপপ্রধান বিশ্বজিৎ ভুঁইয়া বলেন, ‘নন্দীগ্রামকে তৃণমূলের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। বিধানসভা বিজেপির দখলে আনতে হবে। আগামী দিনে সেটাই হবে আমার লক্ষ্য।’ যদিও তৃণমূলের নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাথ পাল বলেন,’ওদের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের ক্ষোভ ছিল।পায়ের তলার মাটি সরে যেতেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আগে থেকে আমরা কিছুই জানতাম না।’
এদিকে স্থানীয় বিজেপির পক্ষে জানানো হয়েছে, ওই প্রধানের বিরুদ্ধে সত্যি সত্যিই এলাকায় দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। একটি সেচখাল সংস্কারে ব্যাপক বেনিয়ম করেছেন তিনি যা নিয়ে সরকারি স্তরে অভিযোগ অবধি দায়ের হয়। বিজেপির কিছু স্থানীয় নেতা উচ্চ নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানাতে চলেছেন যে দলে আসলেও ওই প্রধান যেন ক্ষমতা ভোগ না করতে পারেন।