বিভূ কানুনগো: ভোট আসে ভোট যায় তারও মধ্যে থেকে যায় মানুষের প্রতিবন্ধকতাগুলি যা চাইলেও মানুষ তার জীবন থেকে সরিয়ে দিতে পারেনা। অসুখ বিসুখ, বার্ধক্য, শারীরিক সমস্যা শীত গ্রীষ্ম বর্ষা কিংবা লকডাউন, অতিমারি, নির্বাচন কোথায় থেমে থাকে? তাই কিছু মানুষ কিছু প্রতিষ্ঠান থাকে যারা উৎসব আনন্দ কিংবা চূড়ান্ত শোকের মধ্যেও সেই সব মানুষের জন্য কাজ করে যান যাঁদের সমস্যা গুলি প্রায় চিরন্তন। রবিবার তেমনই কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনকে দেখা গেল জনকল্যাণ মূলক কর্মসূচিতে। নির্বাচনের চূড়ান্ত ব্যস্ততার মধ্যেও তাঁদের এই অন্যরকম কর্মসূচি মন কেড়ে নিল খড়গপুর শহরবাসীর।
রবিবার কৌশল্যা সিলভার জুবলী হাইস্কুলে একটি অভিনব কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল নবজীবন দিব্যাং সমিতি। খড়গপুর মহকুমার যে সমস্ত দিব্যাঙ্গ বা শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষজন তাঁদের জন্য একটি আ্যসেশমেন্ট বা মাত্রাকরন। সংগঠনের কর্ণধার অরুন শ্যামল জানিয়েছেন, “কোনও মানুষ বিশেষ ভাবে সক্ষম হলেও তাঁকে জানাতে হয় তিনি কোথায় সমস্যাগ্রস্ত এবং কত পরিমান সমস্যাগ্রস্ত। সরকারি এবং অন্যান্য নানা সহায়তা পাওয়ার জন্য এটা তাঁকে জানতেই হবে। কিন্তু এই বিষয়টা তিনি নিজে জানালে হবেনা, জানাতে হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।”
শ্যামল জানান, ” যাঁরা গ্রামে বা মফঃস্বলে থাকেন তাঁরা এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কোথায় পাবেন? তাঁদের জন্যই একটি শিবিরের আয়োজন করলাম আমরা যেখানে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দের আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। খড়গপুর মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দিব্যাংঙ্গরা এখানে এসেছিলেন। এদিন প্রায় ২০০জনের বিভিন্ন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা হয়।”
এদিনই রোটারি ক্লাবের সহায়তায় একটি চক্ষু পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন করেন ‘স্বল্প প্রচেষ্টা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন। খড়গপুর শহরের একেবারে প্রান্তিক এলাকা চণ্ডীপুর লাগোয়া স্বাধীন ক্লাবে বিনামূল্যে এই চক্ষু পরীক্ষা শিবির হয়। সংগঠনের সদস্য সুদীপ সরকার, জয়ন্ত ঘোষ, সমীর মন্ডলরা জানিয়েছেন, এই আই ক্যাম্পের দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রাথমিকভাবে যাঁদের ওষুধেই দৃষ্টি শক্তির নিরাময় হতে পারে তাঁদের কোন ওষুধ বা কি ধরনের পরিচর্যা প্রয়োজন সেই পরামর্শ দেওয়া এবং দ্বিতীয়ত: যাঁদের অপারেশন বা ছানি কাটানো প্রয়োজন তাঁদের বিনামূল্যে সেই অপারেশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া। এদিন শহর এবং লাগোয়া খড়গপুর গ্রামীন অংশের প্রায় ১০০জন এই শিবিরের সুবিধা নিয়েছেন।
অন্যদিকে এদিন কলকাতার একটি নামি বেসরকারি হাসপাতাল ফোর্টিজের সহায়তায় মালঞ্চ এলাকার নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করেছিল বালাজি পল্লী উন্নয়ন সমিতি। সমিতির কর্ণধার সমীর গাঙ্গুলি জানালেন, এই নিয়ে চারবছর ধরে নিয়মিত এই শিবির করে আসছি আমরা। এলাকার বয়স্ক, দুঃস্থ ইত্যাদি মানুষকে একই ছাদের তলায় কয়েকটি বিশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সুযোগ করে দিয়েছিলাম আমরাযার মধ্যে সুগার, প্রেসার এবং ইসিজির মত সাধারণ পরীক্ষার পাশাপাশি হাড়ের ক্ষমতা নির্ধারনের মত পরীক্ষাও করা হয়েছে। মানস মন্ডল, অপরেশ বোস, উমাশঙ্কর চ্যাটার্জীরা জানিয়েছেন কিছুদিনের মধ্যে আরও একটি শিবির করে নাক কান গলা এবং চোখের পরীক্ষাও করা হবে।