নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর কৃষি আইন বাতিল,শ্রম আইন বাতিল, বেকারদের কর্মসংস্থানের দাবি সহ নানা দাবিতে বামপন্থী ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন গুলির ডাকে দেশজুড়ে ধর্মঘট হলো বৃহস্পতিবার। বিক্ষিপ্ত অশান্তি, কিছু ধর্মঘটকদের গ্রেপ্তারে ঘটনা ঘটলো বৃহস্পতিবারের সাধারণ ধর্মঘটে। এবারের ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব পড়লো মেদিনীপুর শহর তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে। পুরোপুরি সর্বাত্মক না হলেও অনেকাংশেই সফল এবারের ধর্মঘট,বলে অনুমান অভিজ্ঞ মহলের। মেদিনীপুর শহরের কিছু দোকানপাট খোলা থাকলেও বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। দৈনিক বাজার গুলোতে কিছু ক্রেতা-বিক্রেতাকে দেখা গেলেও তা অন্যান্য দিনের চেয়ে কম। কিছু সরকারি বাস পথে নামলেও যাত্রী খুব বেশী ছিলেন না।অন্যদিকে বেসরকারি বাস সেভাবে পথে দেখা যায় নি। ডাক,ব্যাঙ্ক,বীমা ক্ষেত্রে ভালো প্রভাব পড়েছে। এদিন সকাল থেকেই ধর্মঘটের সমর্থনে সকাল সকাল রাস্তায় নেমেছিলেন বাম নেতাকর্মীরা । মেদিনীপুর শহরের হেড পোস্ট অফিস, বাস স্ট্যান্ড সহ বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হয়ে বামপন্থী কর্মী সমর্থকরা ধর্মঘটের সমর্থনে শ্লোগান দেন।খড়গপুর শহরের পুরসভা লাগোয়া রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন বামপন্থী কর্মী সমর্থকরা। এদিন সকালে খড়গপুর পরে পুলিশী হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে দেওয়া হয়।
মেদিনীপুর শহরের ক্ষুদিরাম মোড়ে জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে বেলা দশটা নাগাদ মিছিল জমায়েত হন একটা বড় সংখ্যক বাম কর্মী সমর্থক। ছিলেন দলের শীর্ষ নেতারাও। এখানে রাস্তা অবরোধ করে ক্রিকেট খেলতে শুরু করার মধ্য দিয়ে ধর্মঘটের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন বামপন্থী ছাত্র যুবরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডিওয়াইএফআই এর প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে সিপিআইএম এর রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিনহা, দলের জেলা নেতৃত্ব কীর্তি দে বক্সী সহ অন্যান্যরা।রাস্তা আটকে এই খেলাকে কেন্দ্র করে সাময়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ক্রিকেট খেলার সময় কোতওয়ালী থানার পুলিশ বাহিনী আই সি নেতৃত্বে নেতৃত্বে অবরোধকারীদের হটাতে গেলে পুলিশের সংগে বচসা শুরু হয়ে যায় আন্দোলনকারীদের। সেই সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের ঠেলে রাস্তার পাশে সরাতে গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে মহুয়া সিনেমা এলাকায় ওভারব্রিজের সামনে ও জজকোর্ট এলাকায় বাস ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় ধর্মঘটের সমর্থকরা।
সকাল থেকে পুলিশের সাথে বিচ্ছিন্ন কিছু গন্ডগোল বচসা ছাড়া মেদিনীপুর শহরে মোটামুটি নির্বিঘ্নে এবং সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হচ্ছিল । ধর্মঘটীরা মিছিল, স্লোগান, পথ অবরোধ, ট্রেন অবরোধ, বাস অবরোধ, পিকেটিং ইত্যাদি চালিয়ে যাচ্ছিল । পুলিশও তাদের নিয়ন্ত্রণ করার সর্বাত্মক চেষ্টায় ছিল । দুপুর ১২.৩০ পর্যন্ত এইভাবে চলার পর ধর্মঘটীরা যখন ফিরছিল, তখন কোন কারন ছাড়াই মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানার পুলিশ ধর্মঘটের সমর্থক ৭ জন ছাত্র কর্মীকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়।এঁরা হলেন এসএফআই এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদি, দেবায়ন ভট্টাচার্য্য, অভিষেক চ্যাটার্জী, দিবাকর দোলোই, অরণ্য মন্ডল, রনিত বেরা ও শুভ্র শংকর দাস প্রমুখ।
এ বিষয়ে এসএফআই-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সুপ্রভাত রানা বলেন, “আমাদের গ্রেপ্তার করে ধর্মঘট ভাঙা যাবে না । পুলিশি বাধা হুমকি, গ্রেফতার সত্বেও রাস্তাজুড়ে লড়াই হবে, ধর্মঘট সর্বাত্মক সফল হবে ।”