Homeআবহাওয়াআম্ফান থেকে শিক্ষা! 'যশের' তাণ্ডব মোকাবিলায় জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু রাজ্য প্রশাসনের

আম্ফান থেকে শিক্ষা! ‘যশের’ তাণ্ডব মোকাবিলায় জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু রাজ্য প্রশাসনের

নিউজ ডেস্ক: গতবছর এমন সময়েই রাজ্যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিল আম্‌ফান। সেই ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা এখনও ভুলতে পারেনি রাজ্যবাসী। আর এ বছরও ফের ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়। বলা হচ্ছে, শুক্রবারই উত্তর আন্দামান সাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলেছে একটি নিম্নচাপ। সোমবার শক্তিসঞ্চয় করে সেই নিম্নচাপ পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড় যশ। তার জেরে সোমবার সন্ধের পর থেকে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ৪০-৫০ কিমি বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। মঙ্গলবার সেই ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিমি। তারপর তা বাড়তে থাকবে।

মঙ্গলবার থেকেই দুই রাজ্যের উপকূল এলাকায় শুরু হবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। ধীরে ধীরে বাড়বে বৃষ্টির দাপট। ঘূর্ণিঝড় ক্রমশ উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোতে থাকবে। বুধবার দুই রাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়বে যশ। সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। পাশাপাশি, সমুদ্রে থাকা মৎস্যজীবীদের আগামীকালের মধ্যে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় যশের মোকাবিলায় প্রস্তুত কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে ২০টি বিপর্যয় মোকাবিলা দল। প্রতিটি দলে থাকছেন ৫ জন সদস্য। ডিসি কমব্যাটের অধীনে এরা কাজ করবেন।

গত বছরের আমফানের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এবার বাড়ানো হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সংখ্যা। প্রস্তুত রাখা হয়েছে গাছ কাটার অত্যাধুনিক যন্ত্র, যাতে ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়লে দ্রুত তা সরিয়ে ফেলা যায়। এছাড়াও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে রিভার ট্রাফিক পুলিশকে।গঙ্গাবক্ষে বাড়ানো হচ্ছে নজরদারি। নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে আগামীকাল চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

পাশাপাশি, প্রস্ততি তুঙ্গে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। ঘূর্ণিঝড় যশের আসার কথা মাথায় রেখে দিঘা মোহনায় সমস্ত নৌকাগুলোকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রশাসনকে আগের থেকে প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সমুদ্রে যাওয়ার থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে মৎস্যজীবীদের। তাদের শনিবারের মধ্যে ফিরে আসার আদেশও দিয়েছে প্রশাসন। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার, পানীয় জল, ওষুধ মজুত রাখতে বলা হয়েছে।এছাড়াও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে উপকূলবর্তী সাইক্লোন সেন্টারগুলি ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে। তৈরি রাখা হয়েছে এনডিআরএফকে।

সেইসঙ্গে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাগরেও একইরকমভাবে সতর্ক পুলিশ-প্রশাসন। মাইকে চলছে প্রচার। প্রস্তুত বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এদিকে তাজপুরে সমুদ্রবাঁধ নির্মাণের কাজ অসমাপ্ত থাকায় আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, করোনাকালে শ্রমিক পেতে সমস্যা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, কার্যত লকডাউন পরিস্থিতিতে থমকে রয়েছে সমুদ্রবাঁধ তৈরির কাজ।

আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এর নিম্নচাপটি শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্তে পরিবর্তিত হতে পারে। এরপর বাংলাদেশের দিকে ঘুরে যেতে পারে এর অভিমুখটি। ঘূর্ণিঝড় উত্তর-পশ্চিম অভিমুখী হয়ে, ২৬ মে, বুধবার পৌঁছতে পারে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে। তার জেরে ২৫ তারিখ, অর্থাত্‍, মঙ্গলবার সন্ধ্যে থেকে দুই রাজ্যের উপকূল এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হতে পারে।

গতবছরের ২০ মে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের ওপর আছড়ে পড়েছিল ‘আমফান।’ এর আগে ২০০৯-এর ২৫ মে সব কিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল আয়লা। আর সেই মে মাসেই এবার আগমন ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’- এর।’যশ’ নামটি ওমানের দেওয়া।। ‘যশ’-এর অর্থ হল হতাশা। আবহাওয়া দফতর ‘যশ’ এর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, এবার নির্ধারিত সময়ের একটু আগেই কেরলে বর্ষা আসতে পারে। ১ লা জুনের বদলে, ৩১শে মে-তেই বর্ষা ঢুকে যাবে। আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেও ২২শে মে-র বদলে, ২১ তারিখই বর্ষার আগমনের সম্ভাবনা। সেই হিসাব মতো, একটু আগে এ রাজ্যেও বর্ষা ঢুকে যেতে পারে। তবে, আগামী কয়েক দিন অস্বস্তিকর গরম থাকবে দক্ষিণবঙ্গে। কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুত্‍ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা। উত্তরবঙ্গের জেলগুলিতে বৃষ্টি বাড়বে।

RELATED ARTICLES

Most Popular