নিউজ ডেস্ক: শুরুতে বলা হত বিজেপি দলটা নাকি ‘পার্টি উইথ ডিফারেন্স!’ দিন যত যাচ্ছে ততই বোঝা যাচ্ছে আর পাঁচটা রাজনৈতিক দল বিশেষ করে দক্ষিণপন্থী দল গুলির চেয়ে বিজেপির তো কোনও ফারাকই নেই উল্টে ক্ষমতা লাভের প্রশ্নে এ দলটি এক দড় এগিয়ে রয়েছে। প্রশ্নটা অবশ্য তখন থেকেই উঠতে শুরু করেছিল যখন নানা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মুকুল রায় থেকে শুরু করে হলে জিতেন্দ্র প্রসাদ তিওয়ারিকে এ দলে সাদরে বরণ করে নেওয়া হয়। মজার ব্যাপার হল এই নির্বাচনে কাটমানি, তোলাবাজি ইত্যাদি যে প্রশ্নগুলি সামনে রেখে বিজেপি নির্বাচন লড়ছে তৃনমূল থেকে আগত ছোট বড় প্রায় সমস্ত নেতাই সেই অভিযোগে অভিযুক্ত।
পরের বিষয়টি হল প্রার্থী তালিকা প্রকাশ এবং বিদ্রোহ। তালিকায় লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ১ দিন থেকে ৭দিনের মধ্যে দলে এসেছেন এমন লোকেদের প্রার্থী করা হয়েছে। উদাহরণ বাড়িয়ে লাভ নেই, এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। অর্থাৎ শুধু দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নয় পদলোভীদেরও স্বাগত। তৃতীয় বিষয়টি হল প্রার্থী হতে না পেরে কিংবা মনের মত প্রার্থী না হওয়ায় দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করা। যেমনটা করলেন হুগলি জেলার সভাপতি। লকেটকে প্রার্থী করতেই রাজনীতি থেকে অবসর ঘোষণা করলেন বিজেপি নেতা সুবীর নাগ।
রবিবার বিজেপি প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। এদিন সংবাদমাধ্যমে ‘জয়’ নিয়ে আশাবাদী বলে; বিবৃতি শেষ করেছেন চুঁচুড়ার বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় কে প্রার্থী করতে রাজনীতি থেকে অবসর ঘোষণা করলেন চুঁচুড়ার বিজেপি নেতা সুবীর নাগ।
সুবীর নাগ দীর্ঘ দিন দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। বাংলার মসনদ দখলের লড়াইয়ে চুঁচুড়ার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবেও উঠে আসছিল তাঁর নাম। কিন্তু ঐ কেন্দ্রে হুগলির সাংসদ লকেটকে পদ্মশিবির প্রার্থী ঘোষণার পরমুহূর্তেই তিনি চিরতরে রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
তিনি জানিয়েছেন, ‘মূল্যায়নে ভুল হয়েছে দলের।‘ রবিবার তৃতীয় ও চতুর্থ দফার যে ৬৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি, তাতে হুগলির সাংসদ লকেটকে চুঁচুড়ার প্রার্থী করা হয়েছে। তার পরেই অবসরের কথা ঘোষণা করেন সুবীর। দলের প্রতি অভিমান থেকেই যে এমন সিদ্ধান্ত, তা নিয়েও কোনও রাখঢাক করেননি সুবীর। তিনি বলেন,”কোথাও যেন দল আমার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না। তেমনই মনে হয়েছে আমার। এখনও দলের আদর্শ মাথায় নিয়েই রয়েছি। কিন্তু যে পরিশ্রম করে দলকে দাঁড় করিয়েছি, তার মূল্যায়নটা কোথাও যেন হল না!”
বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভের ঘটনা সামনে এসেছে প্রার্থী তালিকা সামনে আসার পর থেকেই । কিন্তু সুবীর রাজনীতি থেকে একেবারে ‘সন্ন্যাস’ নেবেন তা বিজেপির রাজ্য নেতাদের কেউই আঁচ করতে পারেননি । তবে লকেটের দাবী, গোটাটাই দলের সিদ্ধান্ত। তবু তিনি এক বার কথা বলে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।তিনি বলেন, ”কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভের ব্যাপার নেই। সাময়িক এ সব হয়। দরকারে আমি নিজে কথা বলব।”