ওয়েব ডেস্ক : করোনা পরিস্থিতি এই মূহুর্তে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে৷ কবে আসবে ভ্যাকসিন এই নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। এবার সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী বছর জানুয়ারিতেই পশ্চিমবঙ্গের হাতে আসতে চলেছে করোনা ভাইরাসের মৃত্যুবান ‘কোভ্যাকসিন’। চলতি মাসে ইতিমধ্যেই ভারত বায়োটেকের দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সফল হয়েছে৷ এবার আগামী মাসেই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই করোনা টিকার তৃতীয় দফায় ট্রায়াল শুরু হবে। হায়দরাবাদের ‘ভারত বায়োটেক’ ও আইসিএমআরের যৌথ উদ্যোগে সেই ট্রায়ালে অংশ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সেপ্টেম্বরে এই ট্রায়াল শুরু হলে, জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহেই ভ্যাকসিন হাতে পাবে পশ্চিমবঙ্গ। তবে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, একইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ, চেন্নাই, হায়দরাবাদ এবং দিল্লিতেও ওই একই সময় পৌঁছে যাবে এই দেশীয় ভ্যাকসিন। আশা করা যাচ্ছে ২০২১ এর মার্চ মাসের মধ্যেই একে একে গোটা দেশে পৌঁছে যাবে করোনার কোগ-ভ্যাকসিন। নাইসেডের দাবি, দেশীয় এই ভ্যাকসিন একবার শরীরে প্রবেশ করলেই আজীবন করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হবে৷
এবিষয়ে মঙ্গলবার দেশের শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা আইসিএমআরের প্রথম সারির বিজ্ঞানী তথা নাইসেড ডিরেক্টর ডা শান্তা দত্ত জানিয়েছেন, “ভারত বায়োটেক সংস্থার করোনা ভ্যাকসিনের আগস্টের ট্রায়াল সফল। সেপ্টেম্বর মাসে দেশের বাছাই করা পাঁচটি শহরে তৃতীয় দফার ট্রায়াল হবে। সেই ট্রায়ালে অন্যতম অংশীদার পশ্চিমবঙ্গ। দেশের অন্যতম ৫ শহরের মধ্যে অন্তত এক লক্ষ নাগরিক এই ট্রায়ালে অংশ নিতে চলেছেন।” তিনি আরও জানান, “নিয়ম অনুযায়ী তৃতীয় দফায় ভ্যাকসিনের ফল কেমন হল তা যাচাই করতে চার থেকে ছ’মাস সময় লাগে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমতি সাপেক্ষে জানুয়ারি মাসেই করোনা ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।”
ভ্যাকসিনের বিষয়ে নাইসেড অধিকর্তা জানান, “এই ট্রায়াল সফল যে হবে, সে বিষয়ে আশাবাদী সকলে। তৃতীয় দফার ট্রায়ালের ঠিক চারমাস পর করোনা ভ্যাকসিন হাতে পাবে পশ্চিমবঙ্গ। শুরু হবে গণটিকাকরণ।” জানা গিয়েছে, তৃতীয় দফার ট্রায়ালে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ অংশ নিতে চলেছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষ চাইলে স্বেচ্ছায় অংশ নিতে পারবেন। নাইসেডের তরফে জানা গিয়েছে, আইসিএমআর এর অধিকর্তা ডা রামচন্দ্রন নিজে এই ট্রায়ালের ভ্যাকসিন সম্পর্কিত পুরো বিষয়টিরই দেখাশোনা করছেন।
তবে এই ভ্যাকসিন হাতে পেতে ৪ মাস সময় লাগবে কেন তা নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে জল্পনা। এবিষয়ে নাইসেডের তরফে জানানো হয়েছে, মূলত, আইসিএমআর করোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষা থেকে উৎপাদন-বিপণন সমস্ত বিষয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রোটোকল মেনেই করা হচ্ছে। সেকারণেই ভ্যাকসিন হাতে পেতে এতটা সময় লাগবে।
তবে জানুয়ারিতে ভ্যাকসিন হাতে পেলেও আদতে দেশের মানুষ বিনা খরচায় এই ভ্যাকসিন পাবেন কিনা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এবিষয়ে নাইসেডের ডিরেক্টর শান্তা দত্ত বলছেন, “পরিকল্পনা রয়েছে জানুয়ারিতে ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অফ ইন্ডিয়া থেকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমোদনের পর অন্য প্রতিষেধকের মতোই গণটিকাকরণ কর্মসূচির আওতায় আসবে এই ভ্যাকসিন। আইসিএমআরের আরেক বিজ্ঞানী ডা এস আই গিরি এই ট্রায়ালের সঙ্গে জড়িত। তাঁর কথায়, “করোনা নিয়ন্ত্রণে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। রাজ্যগুলির সঙ্গে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবাকেও যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।”