পলাশ খাঁ, গোয়ালতোড় :- বাবার ক্রোধের হাত থেকে নাবালিকা মেয়েকে বাঁচাতে গিয়েও বাঁচাতে পারলেননা মা। পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় থেকে মেয়েকে নিয়ে গড়বেতার চন্দ্রকোনা রোডের ননদের বাড়িতে চলে এসেছিলেন মা। কিন্তু সেখানে অর্থাৎ নিজের বোনের বাড়িতে এসেই মেয়েকে পিটিয়ে মেরে ফেললেন বাবা। পুলিশের অবশ্য অনুমান ঠিক মারার জন্য নয়, রাগের বশেই মেয়েকে শায়েস্তা করতে গিয়েই ঘটনাটি ঘটেছে। রবিবার সন্ধ্যাবেলায় ঘটনাটি ঘটেছে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার সাতবাঁকুড়ায়।
জানা গেছে পরিচিত এক আত্মীয় যুবকের সাথে প্রেমের জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে গোয়ালতোড় থানার কান্তোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ওই বালিকা। ২ মাস গর্ভবতী জানার পরই সংসারে ঝড় ওঠে। ক্রুদ্ধ বাবার হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে গোয়ালতোড় থেকে ননদের বাড়ি চলে আসেন মা। ভেবেছিলেন বাবার রাগ পড়ে গেলে বসে সমস্যা সমাধানের পথ বের করবেন কিন্তু সেই সুযোগ আর পাওয়া গেলনা। অভিযুক্ত ননীগোপাল মাঝিকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মৃতার বাড়ি গোয়ালতোড়ের থানার আমলাশুলির বোলবাঁন্দি গ্রামে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে মৃতা ওই নাবালিকা দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় এক প্রতিবেশী যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে৷ এই সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি ছিল নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারটির। তাই মাঝেমধ্যেই বাড়িতে অশান্তি হতো। কিন্তু ততদিনে কিশোরী দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা পড়ে ৷ তা থেকেই পরিবারে অশান্তি চরমে ওঠে ৷ এই অশান্তি এড়াতে মৃতার মা পুতুল মাঝি মেয়েকে নিয়ে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন মেয়ের পিসির বাড়ি সাতবাঁকুড়াতে চলে আসে৷
এদিকে গ্রামের বাড়ি থেকে সাতবাঁকুড়াতে হাজির হয়েছিল কিশোরীর বাবাও ৷ রবিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে পুনরায় অশান্তি শুরু হয়। তখনই রাগে নিজের মেয়েকে লাঠি নিয়ে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে বাবা নাড়ুগোপাল মাঝি৷ এলোপাথাড়ি মারের কারনে সেখানে মেয়ে লুটিয়ে পড়ে ৷ মেয়ে-র ওই পরিস্থিতি দেখতে না পেরে মেয়ের মা একটি ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে ৷ অন্যদিকে মারের ফলে মেয়ে মারা গিয়েছে বলে বুঝতে পারে মেয়ের বাবা ৷ তখন দেহটি একটি বস্তাতে ভরে রেখে দেয় বাড়িতে ৷ অভিযোগ রাতে রেললাইনে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বাবার।
এদিকে এই ঘটনার কথা জানতে পারে প্রতিবেশীরা। তারাই খবর দেয় হয় পুলিশে ৷ খবর পেয়ে চন্দ্রকোনা রোড পুলিশ বিট হাউসের পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের জন্য এবং গ্রেফতার করে অভিযুক্ত কে। ঘটনায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।